দশম শ্রেণীর ছাত্র দীপেন চাকমাকে কাপ্তাই লেকে নিখোঁজের ৬ ঘন্টার পরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি

0
50

রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার ঘাট থেকে রাজবাড়ি ঘাটে সাতার দিয়ে পারাপারের সময় দীপেন চাকমা নামে একজন দশম শ্রেণী ছাত্র পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়।

দীপেন চাকমা রাজদ্বীপ এলাকার মহেশ্বর চাকমার একমাত্র ছেলে। সে রাঙ্গামাটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণীতে পড়ে। তার মাতার নাম মিতালী চাকমা। ঘাটের মাঝিকে একঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা এবং ডাক দেওয়ার পরও না আসার কারণে দীপেন চাকমা ও তার সহযোগিরা পানিতে সাতার কেটে পারাপার হয়।

আজ ৪ জুন ২০২৫ খ্রি:সকাল আনুমানিক ১১টার সময় রাজবন থেকে রাজবাড়িতে সাতার দিয়ে পারাপারের সময় কাপ্তাই লেকের পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছে। এই ঘটনাটা জানাজানি করতে প্রায় একঘন্টা সময় চলে যায়। দুপুর ১২টায় একদল জেলে বেড়াজাল দিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। সেই উদ্ধা কার্যক্রম প্রায় দুপুর ২:৩০টা পর্যন্ত পরিচালনা করেন। তারা পর পর তিনটি স্থানে তার জাল ফেলে উদ্ধার কাজ চালায়। পরবর্তীতে ২:৪০ মিনিটে কাপ্তাই নেভি ক্যাম্প থেকে লে: কর্নেল মো: হামিদের নেতৃত্বে একটি উদ্ধাকারী টিম চলে আসে। তারা একটানা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাশি উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন। প্রায় ৫০০মিটার এলাকা জুড়ে উদ্ধারকারী টিম উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।

নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী টিমের সাথে রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পরিচালক মোঃ আবদুল মান্নান আনসারীর নেতৃত্বে একটি টিম উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়েছেন একটানা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি টিমটি খাগড়াছড়ির পানছড়িতে উদ্ধার কাজ পরিচালনা ব্যস্ত থাকার কারণে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ থেকে ডুবুরি টিম এনে এই কাজ পরিচালনা করতে একটু বেশি সময় ব্যয় হয়েছে। কারণ দীপেন চাকমার বাবা দুপুর ১২টার দিকে রাঙ্গামাটির ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য প্রতুল দেওয়ানও ফায়ার সার্ভিসকে কল দিয়ে জানিয়েছেন বলে আমরা মিঃ আনসারীর সাক্ষাৎকারের সময় জেনেছি।

দীপেন চাকমা

পরবর্তীতে স্বতন্ত্র পেশাদারী ডুবুরি টিমও দুই উদ্ধারকারী টিমের সাথে যুক্ত হয়ে নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।

উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্তির পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ডুুবুরি টিমের লিডার লেঃ কর্নেল মোঃ হামিদ জানান তারা যথা সাধ্য উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন কিন্তু কি কারণে দীপেন চাকমা উদ্ধার করতে পারলেন না সেটা আচার্য বিষয় মনে করছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি আরো বলেন যেহেতু বড় ধরনের কোন সরকারী সম্পত্তি ডুবে যায় নাই সেহেতু আগামীকাল তারা উদ্ধার কাজ পরিচালনা করবেন না। যেহেতু দীপেন চাকমাকে জীবিত উদ্ধারে সম্ভাবনা নেই বিধায় আশপাশেরে কোন জায়গায় ভেসে উঠবে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। এবং ফায়ার সার্ভিসের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।

অপর দিকে ফায়ার সার্ভিস টিমের পরিচালক মোঃ আনসারী বলেন তারাও যথা সাধ্য দীপেন চাকমা উদ্ধার করার চেষ্টা করেছেন। আগামীকাল উদ্ধার প্রক্রিয়ায় তারা অংশ গ্রহন করবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে দীপেন চাকমার বাবা এই ঘটনার জন্য ঘাটের মাঝি ও ফায়ার সার্ভিসের তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ বা সহযোগিতায় বিলম্ব হওয়ার জন্য তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। তিনি আগামীকালও প্রশাসনের উদ্যোগে তার ছেলের উদ্ধার কাজ অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.