মাঠে নেই, কিন্তু আলোচনায় আছেন। নেইমারকে ভুলে যাওয়ার আসলে কোনো উপায় নেই। তিনি চোট পেলে সেটা খবর, চোট থেকে ফিরে এলেও। আর এই চোটে পড়া আর ফিরে আসার মাঝে যে সময়, তখন আলোচনা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। এই প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদ হচ্ছে, এই জোড়া লাগছে। বিচ্ছেদ আর জোড়া লাগার মাঝে আবার অন্য নারীতে মজেও আলোচনায় নেইমার। এভাবেই কাটছে তাঁর জীবন।
ব্রাজিলের সর্বকালের সেরাদের একজন হয়ে ওঠার আভাস দিয়ে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। সেরাদের একজন হয়েছেন। নিজের সময়ের তো অবশ্যই। তবে সর্বকালের সেরা হয়ে ওঠার মতো কিছু আসলে এখনো করতে পারেননি। তবু এই ব্রাজিল দলে ৩৩ বছর বয়সী নেইমার যেন সবেধন নীলমণি। হ্যাঁ, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রাফিনিয়া কিংবা রদ্রিগোরা এসেছেন, ভালোও করছেন। কিন্তু কেউ নেইমার হয়ে উঠতে পারেননি।

ফলে শেষ পর্যন্ত নেইমারকে নিয়েই আলোচনা। মেসির ছায়ায় থাকবেন না বলে পিএসজি গেলেন, সেখানে বড় কিছু করতে না পেরে পাড়ি জমালেন সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে, সেখানেও জমাতে পারলেন না, ফিরলেন নিজের কৈশোরের ক্লাব সান্তোসে।
ফুটবল ক্যারিয়ারের মতো বেশ উত্থান-পতন তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও। বিশেষ করে প্রেমজীবনে। সেখানেও প্রেম, বিচ্ছেদ, বাচ্চা, আবার প্রেম—কত যে টুইস্ট! নেইমারের এই প্রেমজীবন নিয়েও বানানো যাবে চমকপ্রদ এক রোমান্টিক সিরিজ।
প্রথম প্রেম, প্রথম সন্তান, বিচ্ছেদ ও বন্ধুত্ব
নেইমারের প্রথম প্রেমিকা কারোলিনা দান্তাস। তখন নেইমার টিনএজার। বছরটা ছিল ২০১০। প্রেম জমেছিল ভালোই। ২০১১ সালে জন্ম নিল তাঁদের প্রথম সন্তান দাভি লুকা। কিন্তু কারোলিনার সঙ্গে নেইমারের সেই প্রেম টিকল না বেশি দিন। বন্ধুত্বটা অবশ্য আজও অটুট। অন্তত দুজনেরই এমন দাবি। দেখেও সে রকমই মনে হবে। দুজনে মিলেমিশে ছেলেকে বড় করছেন। কখনো ছেলের জন্মদিনে কেক কাটছেন, কখনো ইবিজায় একসঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছেন। একেবারে ‘মর্ডান কো-প্যারেন্টিং’–এর পোস্টার কাপল!

ব্রুনা, মাভি এবং নাটকীয় ফিরে আসা
এরপর নেইমারের জীবনে এলেন ব্রুনা বিয়ানকার্দি—ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার, স্টাইল আইকন। ২০২২ সালে প্রেম শুরু, কিছুদিনেই ব্রেকআপ, আবার মেকআপ! তারপর ২০২৩ সালের অক্টোবরে এল তাঁদের প্রথম কন্যা মাভি। কিন্তু নেইমারের জীবন বলে কথা, সব এত ঠিকঠাক চলে নাকি!

মাঠে যেমন মাঝেমধ্যে ফাউল করে বসেন, তেমনি জীবনের মাঠেও একটু গোল পাকিয়ে ফেললেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রুনা আর নেইমারের বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু আবারও তাঁরা এক হন ২০২৪ সালের শেষে; কারণ, আসছে আরেকটি মেয়েসন্তান! মানে, নেইমারের চতুর্থ সন্তান—দ্বিতীয় কন্যা! এই তো দুদিন আগেই নেইমারের এক ইনস্টাগ্রাম পোস্ট থেকে জানা গেল আবারও তাঁর সন্তানের মা হতে চলেছেন ব্রুনা।
তৃতীয় তাহলে কে
চতুর্থ সন্তান শুনেই হয়তো ভাবছেন, তৃতীয়জন হলো কবে? হ্যাঁ, সেটাও আরেক গল্প। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি জানা গেল, এক ব্রাজিলিয়ান মডেল-ইনফ্লুয়েন্সার অ্যামান্ডা কিম্বার্লির কোলেও এসেছে নেইমারের আরেক কন্যা—হেলেনা। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রুনার সঙ্গে তখন বিচ্ছেদকাল চলছিল নেইমারের। নিজেও তখন হাঁটুর চোটে মাঠের বাইরে। কিন্তু মাঠের বাইরেও বসে থাকেননি! জড়িয়ে পড়েছিলেন নতুন সম্পর্কে।

হেলেনার জন্মের পর কিছু নাটকও হয়েছে। নেইমার প্রথমে ডিএনএ টেস্ট চেয়েছিলেন। পরে সেটা হয়েছিল কি না, তা আর জানা যায়নি। আর অ্যামান্ডার সঙ্গেও এখন কোনো সম্পর্ক নেই নেইমারের। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও একে অন্যকে অনুসরণ করেন না! তবে হেলেনার বাবার দায়িত্ব পালনে কোনো কমতি রাখছেন না নেইমার।
এখন তাহলে পরিবার কেমন

তো এখন নেইমারের ফ্যামিলি মানে একটা ছোটখাটো ফুটবল টিম। নেইমার নিজে, সঙ্গে বান্ধবী ব্রুনা। আর আছেন নেইমারের সন্তান দাভি, মাভি, হেলেনা এবং ব্রুনার গর্ভে অপেক্ষমাণ আরেকজন। পরিবার এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, এটা যদি ভেবে থাকেন, তাহলে হয়তো ভুলই করছেন। নেইমার বলে কথা, চমক দেওয়াতে তাঁর জুড়ি আছে নাকি!