পুরোপুরি বদলে যাওয়া এক নির্বাচনী পরিবেশে আজ সোমবার ভোট দিচ্ছেন কানাডার জনগণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ও কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা নির্বাচনের আগে প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এ ধরনের হুমকি কানাডায় দেশপ্রেমের জোয়ার সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে লিবারেল পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি সমর্থন বেড়ে গেছে। কার্নি রাজনীতিতে নতুন মুখ। তিনি এর আগে কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ছিলেন।
গতকাল রোববার নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ওই দিন দেশটির ভ্যাঙ্কুভারে ভিড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ১১ জন নিহত হন, আহত হন অনেকে।
এ ঘটনায় মার্ক কার্নি তাঁর নির্বাচন প্রচারণা স্থগিত করেন। তিনি ও কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী পিয়েরে পলিয়েভরে তাঁদের চূড়ান্ত প্রচারণায় ওই মর্মান্তিক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন।
প্রাণহানির এ ঘটনা নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। তবে ক্যালগেরির মাউন্ট রয়্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডুয়েন ব্র্যাট বলেন, তিনি মনে করেন না এ ঘটনা ভোটারদের নিরুৎসাহিত করবে।
ইপসোস ও অ্যাংগাস রিডের করা আলাদা জরিপে দেখা গেছে, পলিয়েভরের কনজারভেটিভ দলের তুলনায় কার্নির লিবারেল দল ৪ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল। শেষ মুহূর্তে সামান্য এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। রোববার ইপসোসের করা এক জরিপে লিবারেল দল ৪২ শতাংশ ও কনজারভেটিভ দল ৩৮ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছে।
এর আগে শনিবার অ্যাংগাস রেইডের জরিপে লিবারেলরা ৪৪ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছে আর কনজারভেটিভ দল সমর্থন করেছেন ৪০ শতাংশ মানুষ।
জরিপের ফলাফল সঠিক হলে টানা চতুর্থবারের মতো লিবারেল পার্টি সরকার গঠন করতে পারে। তবে কার্নি হয়তো ৩৪৩ আসনবিশিষ্ট হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবেন না। ফলে তাঁকে সরকার গঠনের জন্য ছোট দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হতে পারে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প আবারও কানাডার নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি ঘোষণা করেন, কানাডায় তৈরি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এগুলো চায় না। এর আগে বলেছিলেন, তিনি ‘অর্থনৈতিকভাবে চাপ’ দিয়ে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানাতে পারেন।
ব্র্যান্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কেলি সন্ডার্স বলেছেন, ‘সম্ভবত এটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। সবকিছুই যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা হুমকির কারণে আড়াল হয়ে গেছে।’
ভ্যাঙ্কুভারভিত্তিক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা ৩৭ বছর বয়সী অ্যান্ডি হিল বলেন, ‘সম্ভবত আমি এবার কার্নিকে ভোট দেব; কারণ, এই মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছে, আমাদের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।’
৬৬ বছর বয়সী বব লো দক্ষিণ ক্যালগেরিতে বসবাস করেন। সেখানে তাঁর গবাদিপশুর খামার রয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে কনজারভেটিভদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
রয়টার্স, অটোয়া