- বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের ১১৫ জনকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়। উপস্থিত ছিলেন ৬১ জন।
- ২৭তম ব্যাচ থেকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয় ১৫৪ জনকে। এর মধ্যে উপস্থিত হন ৭৫ জন।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে জেলা প্রশাসক (ডিসি) হওয়ার আগ্রহে হঠাৎ ভাটা দেখা দিয়েছে। আগে যেখানে এ পদে নিয়োগ পেতে ব্যাপক আগ্রহ থাকত, তদবিরও হতো; সেখানে এখন ডাক পেয়েও সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন না প্রায় অর্ধেক সংখ্যক কর্মকর্তা।
ডিসি নিয়োগে এখন পর্যন্ত দুটি ব্যাচের ২৬৯ কর্মকর্তাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডেকেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু সাক্ষাৎকার দিতে গেছেন ১৩৬ জন, অর্থাৎ প্রায় ৪৯ শতাংশ কর্মকর্তা সাক্ষাৎকারে অনুপস্থিত থেকেছেন।
ডিসি নিয়োগে কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অনুপস্থিত ৪৯% কর্মকর্তা।
জেলা প্রশাসক পদটি সব সময়ই প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য আকর্ষণীয়। এটি মাঠ প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ। মনে করা হয়, পদটি সম্মানজনক। এ পদে ক্ষমতা ও সুবিধা রয়েছে। কর্মকর্তাদের একাংশ সব সরকারের সময়েই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ আমলা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে ডিসি হতে তদবির করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দিকে ডিসি হতে বিক্ষোভ ও হট্টগোল করেছিলেন বেশ কিছু কর্মকর্তা।
কেন হঠাৎ আগ্রহ কমে গেল, তা জানতে সাক্ষাৎকারে ডাক পাওয়া অন্তত ১০ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা মোটাদাগে পাঁচটি কারণ তুলে ধরেছেন। প্রথমত, বিগত তিনটি বিতর্কিত, একতরফা ও পাতানো নির্বাচনের সময়ে ডিসি পদে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা এখন জবাবদিহির মুখে পড়ছেন। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকেরই সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এখন ডিসি হলে আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে। কোনো না কোনো সময় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে। উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রশাসনের ৪৩ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাঁরা রাতের ভোট নামে পরিচিতি ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ডিসি হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এ ছাড়া ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় ডিসি পদে দায়িত্ব পালনকারী (চাকরির বয়স ২৫ বছর হয়েছে) ২২ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অতীতেও কিছু কর্মকর্তা ডিসি নিয়োগের সাক্ষাৎকারে যেতেন না। এবার অনাগ্রহী কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে ডিসি পদের মতো গুরুত্ব জায়গায় তুলনামূলক কম দক্ষতা ও যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের নিয়োগ পেয়ে যেতে পারেন।
আরিফুর রহমান
ঢাকা