জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিরুদ্ধে নির্বাচন বিলম্বের ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ, তা সত্যি নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (৭ মার্চ) আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপিতে প্রকাশিত নাহিদ ইসলামের এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা গেছে এ তথ্য। এনসিপির আহ্বায়ক গত বুধবার (৫ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি দিয়েছিলেন এএফপি।
সাক্ষাৎকারে নাহিদ বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে এখনো সমস্যার মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে প্রায়ই নির্বাচন বিলম্বের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হয়। তবে, এটা সত্যি নয়।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, মূলত, বাংলাদেশের সুদূরপ্রসারী সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে। এমনকি তরুণেরা যে কারণে জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেসব সংস্কারেও আগ্রহী নয় তারা।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান এবং এর পরবর্তী সময়ে আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে আমাদের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি ও আমার দলের নেতারা যদি আগামী সরকার গঠন করতে নাও পারি, তারপরও আমরা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করেছি, যা আগামী কয়েক দশক ধরে প্রভাব বজায় রাখবে।
নাহিদ বলেন, কেউই জানতেন না, একটি অভ্যুত্থান হবে। তবে, এটি হয়েছে। আমি আন্তরিকতার সঙ্গে আশা করি এবং বিশ্বাস করি যে আমরা এবার বিজয়ী হতে চলেছি। তবে, এই নির্বাচনই পৃথিবীর শেষ নয়, আমাদের লক্ষ্য হলো এই শক্তিটাকে আরও ৫০ বা ১০০ বা বেশি বছর টিকিয়ে রাখা।
মূলত, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করেন—এমন সব মতাদর্শের মানুষের জন্য নিজেদের দলকে উন্মুক্ত রেখেছে এনসিপি। তবে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কিছু বিষয় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে এনসিপির। বিএনপির যুক্তি—জনগণের ম্যান্ডেটের একটি সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
এদিকে দল গঠনের পর এনসিপির কমিটি থেকে সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একজনকে সরিয়ে দেওয়া হয় ডানপন্থীদের দাবির মুখে। এ ব্যাপারে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা সবার অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি। তবে, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক রীতিনীতির কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
এনসিপিতে এখনো প্রশংসা করার মতো বৈচিত্র্য রয়েছে উল্লেখ করে দলটির আহ্বায়ক বলেন, আমরা নারীদের সামনে এনেছি এবং সব বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। সব নাগরিক যেন তাঁদের অধিকার ভোগ করতে পারেন, আমরা সে চেষ্টা করব।