
দুজন আত্মঘাতী হামলাকারী গতকাল মঙ্গলবার বিস্ফোরকভর্তি দুটি গাড়ি নিয়ে পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন। হামলায় অন্তত ১২ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহত নাগরিকদের মধ্যে অন্তত ছয় শিশু রয়েছে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে আরও ছয় জঙ্গি নিহত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, বিস্ফোরণের ধাক্কায় কাছের একটি মসজিদের ছাদ ধসে পড়ে। মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজান চলছে। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে স্থানীয় লোকজন দিনভর রোজা শেষে সবে তাঁদের ইফতার শুরু করেছিলেন। ধসে পড়া মসজিদটি একটি ভিড়ে ঠাসা বাজারের ভেতরে ছিল।
বিস্ফোরণের পর জঙ্গিরা সামরিক অবকাঠামোয় প্রবেশের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের রুখে দেয় বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গোলাগুলিতে ছয় জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
তাৎক্ষণিকভাবে ওই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর ওপর পাকিস্তানি তালেবানের হামলা বেড়ে গেছে। এই জঙ্গি দলটি তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে পরিচিত।
কাছের একটি হাসপাতালের মুখপাত্র মুহাম্মদ নোমান বলেছেন, গতকালের হামলায় ১২ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিরা বেসামরিক নাগরিক। তাঁরা ধসে পড়া ভবন ও দেয়ালের নিচে চাপা পড়েছেন।

গতকাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাত শিশু নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল। আজ বুধবার সেই তালিকা সংশোধন করে ছয় শিশু নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে বলেও জানান নোমান।
উদ্ধারকর্মীরা বলেছেন, আর কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হতে তাঁরা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঘটনাস্থলের নানা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লোকজন ধসে পড়া ইট ও ধাতব বস্তু সরিয়ে নিচ্ছেন।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানের শত্রুদের শয়তানি আকাঙ্ক্ষা কখনো সফল হতে দেওয়া হবে না।’
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্ডাপুরও এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
রয়টার্স, পাকিস্তান