মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের খবর পুরোনো হলেও সম্প্রতি আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রদেশটির ৯০-৯৫ শতাংশ এলাকা আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে বলে গত তিন মাস ধরে প্রচার হচ্ছে। এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবন রক্ষায় সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে অর্ধলাখের বেশি রোহিঙ্গা বিভিন্ন উপায়ে উখিয়া-টেকনাফে অনুপ্রবেশ করে এবং তারা স্থানীয় ক্যাম্পসহ বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে বলেছেন, বাধার পরও ৬০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নতুন করে ঢুকে পড়েছে। অনেক সময় মানবিক কারণে বাধা দেওয়া যায় না। সঙ্গে বিদেশিদের একটা চাপ থাকে। এ জন্য আমরাও তাদের সাহায্য-সহযোগিতা বাড়াতে বলেছি। আর এটাও তো ঠিক, যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একটা জায়গায় আটকা।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের প্রশিক্ষণ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নতুন সৃজিত উখিয়া ব্যাটালিয়নের (৬৪ বিজিবি) উদ্বোধনের পর এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে বলে দাবি করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সীমান্ত পুরোপুরি সুরক্ষিত। এখানে কোনো সমস্যা নেই। তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডার দখল করে আছে আরাকান আর্মি। ভবিষ্যতে এটি কার হবে– মিয়ানমার নাকি আরাকান আর্মির, তা বলা মুশকিল। সেজন্য বিজিবি উভয় পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক ও যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, ৬৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে আরও চারটি ব্যাটালিয়ন যুক্ত হলো। এতে বিজিবির সক্ষমতা কিছুটা বৃদ্ধি পেল। আমরা চেষ্টা করছি আরও বাড়ানোর জন্য। কারণ, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় আমাদের বিজিবির সক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার।
উপদেষ্টা বলেন, এই এলাকা দিয়ে সবচেয়ে বেশি মাদক চলে আসে। রোহিঙ্গা সমস্যা তো রয়েই গেছে, মাদক চোরাচালান বন্ধে এখানে এই নতুন ব্যাটালিয়ন খুবই দরকার ছিল। আশা করি, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রয়োজনে আমরা আরও যদি ব্যাটালিয়ন দরকার হয়, তবে ভবিষ্যতে করব। তবুও বর্ডারে যেন নিরাপত্তা ও মানুষ শান্তিতে থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করব।
বর্ডারের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে– বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডারে নিরাপত্তা প্রশ্নে আরাকান আর্মি নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখানে তো সত্যিই সমস্যা একটা আছে। কারণ, অন্য দেশ মিয়ানমার।