পিটার বাটলারের সঙ্গে নারী ফুটবলারদের দ্বন্দ্বের ঘটনায় উত্তাল দেশের ফুটবল। এই ব্রিটিশ কোচের অধীনে ফুটবল খেলবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় দলের ১৮ জন ফুটবলার। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল অনুরোধ করলেও অনুশীলনে যোগ দেননি সাবিনারা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দেশে ফিরেই নারী ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বাফুফে সভাপতি। খেলোয়াড়দের অভাব-অভিযোগ সব শুনে খেলোয়াড়দের সম্মান-মর্যাদা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আজ (শনিবার) অনুশীলনে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তাবিথ আউয়াল।
বাফুফে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানা গেছে, সভাপতির আশ্বাস ও নির্দেশনায় শুক্রবার সারাদিন চিন্তাভাবনা করে ১৮ জন ফুটবলারের মধ্যে অন্তত কয়েকজন আজকের অনুশীলনে যাবেন। কিন্তু তাদের হতাশ করেছেন সাবিনারা।
পিটার বাটলারকে বয়কট করা ১৮ জনের একজনও অনুশীলনে যাননি। সিনিয়র দলে থাকা অবশিষ্ট ১২ জন এবং অনূর্ধ্ব-২০ দলের ফুটবলারদের অনুশীলন করিয়েছেন ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার।
গত ২৯ জানুয়ারি কোচকে অভিযুক্ত করে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বরাবর একটি চিঠি দিয়েছিলেন ১৮ জন নারী ফুটবলার। পর দিন গণমাধ্যমে বিষয়টি উত্থাপনও করেন তারা। এর ঘণ্টা খানেক পরই বাফুফে সাত সদস্যের বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। গত বৃহস্পতিবার সভাপতি বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেছিল সেই কমিটি।
যেখানে খেলোয়াড়দের শৃঙ্খলা ভঙ্গই বড় অংশ হিসেবে আছে। কোচও খেলোয়াড়দের সমান শৃঙ্খলা ভেঙেছেন। বয়স-অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্ব বিবেচনায় সেটা আরও গুরুতর হলেও বাফুফের কাছে যেন লঘু। খেলোয়াড়-কোচ কোনো পক্ষের ওপরই নিয়ন্ত্রণ নেই নারী উইংয়ের।
এই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ৪-৫ জন শাস্তি দিয়েছে বাফুফে। সাবিনাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। তবে বাকিরা শাস্তি না পেলেও পিটারের অধীনে অনুশীলন বয়কট ও ক্যাম্প ছাড়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে রেখেছেন তিনি।
এদিকে ডিজি বাফুফেতে এসে শৃঙ্খলার নির্দেশনা দিলেও বিকেএসপির তিন শিক্ষার্থী সাবিনাদের সঙ্গেই আছেন এবং জাপানিজ বংশোদ্ভূত সুমাইয়ার অভিভাবকের মাধ্যমে সাবিনাদের সঙ্গ ত্যাগ করতে বললেও করেননি।
মূলত, গত অক্টোবরে নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট চলাকালে কিছু নারী ফুটবলার কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে, তিনি সিনিয়র খেলোয়াড়দের পছন্দ করেন না। সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফেরার পর এক সিনিয়র ফুটবলার প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, পিটার বাটলার কোচ থাকলে ক্যাম্পে উঠবেন তারপরও এই কোচের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে বাফুফে। এখন দেখার বিষয়, বাফুফে ও নারী ফুটবলারদের মধ্যে চলমান এই সংকট কীভাবে সমাধান হয়।