বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আরও কমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশে। আগের মাস শেষে যা ছিল ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। বর্তমানের এ ঋণ প্রবৃদ্ধি সাম্প্রতিক সময়ের সর্বনিম্ন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকা এবং ডলার সংকটের কারণে এমনিতেই বিনিয়োগ চাহিদা কম রয়েছে। আবার উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে মুদ্রা সরবরাহ কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাড়ানো হচ্ছে সুদহার। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট রয়েছে। এর মধ্যে দেশের পট পরিবর্তনের পর যাদের হাতে টাকা রয়েছে, তাদের অনেকেই পলাতক। সব মিলিয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে আরও ধীরগতি দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮৫ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। আগের বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। বর্তমানের এ ঋণ প্রবৃদ্ধি গড় সুদহারের অনেক কম। বর্তমানে ব্যাংক ঋণের গড় সুদহার রয়েছে প্রায় ১২ শতাংশে। গত বছরের একই সময়ে ৮ শতাংশের নিচে ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২০২১ সালে মে মাসে একবার ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে নামে। এ সময়ে বেসরকারি খাতে সর্বোচ্চ ঋণ প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশে উঠেছিল ২০০৭-০৮ অর্থবছরে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় ২০০৯-১০ অর্থবছরে। ওই সময় বিভিন্ন উপায়ে ঋণ নিয়ে অনেকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধসের পর বেসরকারি খাতের ঋণে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও ২০১৯ সালের নভেম্বরের আগ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি সব সময় দুই অঙ্কের ঘরে ছিল। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি কমে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে নেমেছিল।