ফের রিজার্ভ ছাড়াল ২০ বিলিয়ন ডলার

0
7
ডলার

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ গত কয়েক মাস ধরেই ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই ওঠানামা করছে। সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসের শুরুতে রিজার্ভ ২১ বিলিয়নের ঘরে উঠলেও মাসটির মাঝামাঝি সময়ে আকুর বিল পরিশোধ করার পর তা কমে ১৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে যায়। তবে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এ ছাড়া রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো অবস্থায় আছে। ফলশ্রুতিতে রিজার্ভ ফের ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে। তবে এখনও ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ১৫ বিলিয়নের ঘরে রয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ চলতি বছরের শুরুতে ছিল ২৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ ছিল ২১ দশ‌মিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার।

গত ৯ জানুয়ারি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের আমদানি বিল বাবদ ১৬৭ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়। এরপর রিজার্ভ কমে ২০ বিনিয়ন ডলারে নেমে যায়। পরে ২২ জানুয়ারি ফের কমে রিজার্ভ; ওই সময় গ্রস রিজার্ভ দাড়ায় ২৫ দশমিক ২২১ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলানে নেমে যায়।

মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। তা হ‌লো- ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তথ্য আনুষ্ঠা‌নিকভাবে প্রকাশ ক‌রে না। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা ও আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।

সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্যপ্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলার কাছাকাছি রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। প্রতি মাসে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। সাধারণত একটি দেশের রিজার্ভ ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান থাকতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের তিনটি হিসাব সংরক্ষণের প্রথমটি হলো- বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভ। মোট রিজার্ভের মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সহজ শর্তের ঋণসহ আরও কয়েকটি তহবিল রয়েছে। দ্বিতীয় হিসাবটির মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি। এ হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত তহবিল বা ঋণের অর্থ বাদ দিয়ে গঠিত তহবিল ধরা হয়। এর বাইরে যে হিসাবটি রয়েছে সেটি ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের ডলারের নিচে নেমে আসে। ওই সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আগের দায় পরিশোধ করতে গিয়ে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে উঠানামা করছে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.