ভারতের বিজেপি সরকার আয়করে বিপুল ছাড় দিয়ে আজ শনিবার পার্লামেন্টে বাজেট পেশ করেছে। এই বাজেটকে ‘আম আদমির বাজেট’ বলে অভিহিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনের ঠিক আগে এই কেন্দ্রীয় বাজেট শাসক দল বিজেপির মনোবল বাড়িয়ে তুলবে বলে ধারণা। প্রধানমন্ত্রীর কথা, জনগণের এই বাজেট প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের স্বপ্ন পূরণ করবে।
নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট মধ্যবিত্ত বেতনভোগী করদাতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। তাঁর দাবি, এই বাজেটে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার বেতনভোগী কর্মীদের ১২ লাখ ৭৫ হাজার রুপি আয় পর্যন্ত কোনো কর দিতে হবে না। শুধু বেতনভোগী মধ্যবিত্ত নন, সব ধরনের আয়ের মানুষের জন্য এই বাজেটে কর কমানো হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ আজ শনিবার ভারতের জাতীয় বাজেট পেশ করেন। তারপর বাজেটের ব্যাখ্যা শুনিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, দেশের উন্নয়নযাত্রাকে এই বাজেট আরও মসৃণ করবে। তিনি বলেন, বাজেটে সাধারণত দেখা হয়, সরকারের কোষাগার ভর্তির আয়োজন কতটা করা হচ্ছে। এবার হয়েছে ঠিক উল্টোটা। এই বাজেটের লক্ষ্য, কী করে আম আদমির পকেটে বেশি টাকা আসে, সঞ্চয় বাড়ে, সেটা দেখা।
আয়করের বিষয়টিই এবারের বাজেটের মুখ্য আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আয়করের ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী ২০২০ সাল থেকে দুটি ধারার প্রচলন করেছিলেন। একটি পুরোনো কর কাঠামো বা ‘ওল্ড রেজিম’, অন্যটি নতুন কাঠামো বা ‘নিউ রেজিম’।
আজ শনিবার বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন করকাঠামোয় অর্থাৎ নিউ রেজিমে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো আয়কর দিতে হবে না। আগে যে ‘স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ছিল ৫০ হাজার রুপি, এই বাজেটে তা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার করা হয়েছে। ফলে ১২ লাখ ৭৫ হাজার রুপি পর্যন্ত আয়করমুক্ত হয়ে যাবে বলে তিনি দাবি করেছেন।
আয়করের নতুন এই ব্যবস্থা আগামী অর্থবছর থেকে চালু হবে। উচ্চ আয়ের কর্মীরাও করছাড়ের আওতায় থাকবেন। বছরে ৫০ লাখ রুপি যাঁদের আয়, নতুন কাঠামোয় তাঁরা ছাড় পাবেন ১ লাখ ১০ হাজার রুপি।
পুরোনো করকাঠামো সম্পর্কে বাজেটে একটি শব্দও অর্থমন্ত্রী উচ্চারণ করেননি। সেই কাঠামোও তিনি অপরিবর্তিত রেখেছেন। এর অর্থ, পুরোনো করকাঠামো মানুষ দ্রুত পরিহার করবে। নতুন কাঠামোই হয়ে দাঁড়াবে কর দেওয়ার একমাত্র উপায়।