কুমিল্লার যুবদলের নেতা তৌহিদুল ইসলামকে সাদাপোশাকধারী লোকেরা ‘নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনে ঘাপটি মারা আওয়ামী দোসররা এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না, সেটার অনসুন্ধান জরুরি বলেও মনে করেন ফখরুল।
আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামকে সাদাপোশাকধারী লোকেরা বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে।
নিহত তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী ও সন্তানেরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে তৌহিদুল ইসলামকে তুলে নেওয়ার বর্ণনা দেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এ ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যা দুর্ভাগ্যজনক। বিচারবহির্ভূত এমন হত্যার ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। সরকার ও প্রশাসনে আওয়ামী দোসররা ঘাপটি মেরে থেকে রক্তাক্ত ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে গভীর অনুসন্ধান জরুরি।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো সরকারি বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। অপরাধ সংঘটনকারী যতই শক্তিশালী হোক, তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আইনের শাসনের অন্যতম শর্ত। বিচারবহির্ভূতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার কোনো অধিকার সরকারি বাহিনীগুলোর নেই।
বিবৃতিতে তৌহিদুল ইসলামকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানান মির্জা ফখরুল। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান বিএনপির মহাসচিব।
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কুমিল্লার যুবদল নেতার এ নির্মমতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলো গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখা। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে আবারও দেশে নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসবে। মানুষ এক অজানা আশঙ্কায় দিনাতিপাত করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেআইনি হত্যা করে কখনোই সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা যায় না। এতে আইনের শাসনকে চরমভাবে অবজ্ঞা করা হয় এবং দেশকে ঠেলে দেওয়া হয় আদিম অন্ধকারের দিকে।