রাজনীতিবিদরা প্রতারণা করছেন: হাসনাত আব্দুল্লাহ

0
8
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
রাজনীতিবিদরা প্রতারণা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
 
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের ‘সাতচল্লিশ-একাত্তর-চব্বিশ: আমাদের বিজয়ের পথপরিক্রমা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
 
হাসনাত বলেন, রাজনীতিবিদরা আমাদের সঙ্গে যে প্রতারণা করছেন এটা আমরা দেখছি। আমরা যেভাবে অতীতকে বর্তমানের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছি ঠিক একইভাবে আপনাদের বর্তমান ভবিষ্যতে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমাদের বর্তমানে রাজনীতিবিদ যারা রয়েছেন আপনারা সংসদভবনমুখী হচ্ছেন; ‘শীঘ্রই হবেন-যাবেন, মিনিস্ট্রি দখল করবেন, গাড়িতে পতাকা উড়বে; কোনো সমস্যা নেই। আমরা রক্ত দিয়েছিলাম যেন আপনাদের যাদের গাড়িতে পতাকা ওঠার যোগ্য, তারাই আসে। তবে আপনারা আমাদের সঙ্গে যে প্রতারণা করছেন এটা আমরা দেখছি।
 
তিনি বলেন, আজকের প্রোগ্রামের টাইটেল ‘৪৭, ‘৭১ এবং ‘২৪-এর বিজয়ের পরিক্রমা। ৪৭ এ যদি বিজয় হইত তাহলে ৭১ হইত না, আবার একাত্তরে বিজয় হইলে ২৪ হইত না। এটা আসলে বিজয়ের পরিক্রমা না, এটা হচ্ছে জাতি হিসেবে আমরা যে প্রতারিত হয়েছে সেই প্রতারণার পরিক্রমা। আমরা ৪৭, ৭১ এ প্রতারিত হয়েছি। ২৪ এ প্রতারিত হচ্ছি কিনা সেটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
 
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বারবার প্রতারিত হয়েছি বলেই আমাদের চব্বিশের অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে। কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জা নেই। যে সংবিধান রাজনীতিবিদদের রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে, ৫ আগস্ট পরে কিছু কিছু রাজনীতিবিদদের সেই সংবিধানের প্রতি বিশাল মমত্ববোধ তৈরি হয়েছে। এটা জাতি হিসেবে আবার আমাদেরকে প্রতারণার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
 
হাসনাত বলেন, ৭২ সালে আমাদের একটি সংবিধান বানাইছে, এটা স্রেফ একটা গার্বেজ। আজকে রাষ্ট্রপতির দাওয়াত ছিল, যে রাষ্ট্রপতি এই সংবিধান থেকে আসছে। ৫ আগস্ট এই সংবিধান শেষ। ওইদিনই রাষ্ট্রপতি শেষ। ফলে ওনার দপ্তর থেকে দাওয়াতে আমি যাব এটা আমার নিজের সঙ্গে প্রতারণা। আজকে যারা রাষ্ট্রপতির দাওয়াতে গিয়েছে তারা বিপ্লবে বিশ্বাস করে না অথবা তারা মনে করে সংবিধানে তাদের একটা স্টেক আছে।
 
৭২ এর সংবিধান বিদেশ থেকে আমদানি করা মন্তব্য করে হাসনাত বলেন, গণপরিষদ করা হলো, বিদেশে ঘুরতে গেলাম জনগণকে রিসার্চ করলাম না, জনগণের সঙ্গে কথা বললাম না। বিদেশ থেকে এখানে ইমপোর্ট করলাম এটা। এভাবে প্রতারিত হয়েছি বলেই ২৪’এর অবতারণা হয়েছে।
 
সভায় হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে কোনো মাইনরিটি নেই। মাইনরিটি তারাই যারা বাংলাদেশ ধারণায় বিশ্বাস করে না। দেশে কেউ ধর্মীয় বা জাতিগত কারণে মাইনরিটি হতে পারে না। আপনি মুসলমান হয়ে যদি আপনি বাংলাদেশ ধারণায় বিশ্বাস না করেন আপনি মাইনরিটি, তখন আপনি যে ধর্মেরই হন আপনি মাইনরিটি। যখনই তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় দরকার প্রয়োজন হয়েছে, তারা মাইনরিটি কার্ড খেলেছে।
 
নরেন্দ্র মোদীর বিজয় দিবস নিয়ে স্ট্যাটাসের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিজয়কে তিনি ভারতের বিজয় বলে দাবি করছেন। যদি এটা ভারতের বিজয় হয়ে থাকে তাহলে একাত্তরে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান করেছে তারা কি সঠিক ছিল? আর যদি তা না হয় তাহলে ভারত মিথ্যাবাদিতা করছে।
 
সভায় ঢাবি শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের সভাপতিত্বে যুক্তরাজ্যের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্যা গালিব, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহিন সরকার বক্তব্য রাখেন। সভায় বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.