বাংলাদেশ সীমান্তে মংডু শহর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি আরাকান আর্মির, গ্রেপ্তার কুখ্যাত সেনা কর্মকর্তা

0
7
আরাকান আর্মি, ফাইল ছবি: রয়টার্স

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এর মধ্য দিয়ে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত জান্তা সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়ল।

গতকাল বুধবার মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতির এক খবরে দাবি করা হয়, মংডুর দখল করা সর্বশেষ ঘাঁটি থেকে কুখ্যাত সেনা কর্মকর্তা ব্রিডেগিয়ার জেনারেল থুরিন তুনসহ জান্তা বাহিনীর কয়েক শ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি।

গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালায় আরাকান আর্মি। এর পর রাজ্যটিতে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই শুরু হয়।

গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, মংডুর পুরো এলাকার ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তারা। শহরটিতে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মংডুর কাছে জান্তার সর্বশেষ ঘাঁটি গত রোববার সকালে দখল করে নেন আরাকান আর্মির সদস্যরা। এটি দখলে তাঁদের দুই মাস লড়াই করতে হয়েছে। ঘাঁটির কমান্ডারসহ জান্তার বেশ কিছু সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরাকান আর্মির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, দৃশ্যত জান্তার সেনারা আত্মসমর্পণের পর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো থেকে সাদা পতাকা হাতে বেরিয়ে আসছেন। এএফপি ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে জানতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

বাংলাদেশ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মংডুর অবস্থান। শহরটি আরাকান আর্মির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি প্রসঙ্গে জান্তা সরকারের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। অবশ্য এতে তারা সাড়া দেয়নি।

এর আগে গত মে মাসে আরাকান আর্মি বলেছিল, মংডু থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে বুথিডং শহর দখল করে নিয়েছে তারা।

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের কয়েকটি প্রবাসী রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর অভিযোগ, আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের জোর করে তাড়িয়ে দিচ্ছে এবং তাঁদের বাড়িঘর লুট করে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তবে আরাকান আর্মি এ অভিযোগকে অপপ্রচার বলে দাবি করেছে।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতী জানায়, আরাকান আর্মি এখন দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে। ইতিমধ্যে আন শহরে ৩০টি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে তারা। অন্য শহরগুলোতেও এগিয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠী।

জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকার আর্মি। ইতিমধ্যে এ গোষ্ঠী গত বছরের অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে উত্তরের শান রাজ্যের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.