বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়ন হচ্ছে অভিযোগ করে তা বন্ধের দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। প্রধানত রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) উদ্যোগে এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরঙ্গ দলের সক্রিয় সহযোগিতায় এই কর্মসূচি পালন করা হয় ‘সিভিল সোসাইটি অব দিল্লি’র ব্যানারে।
মিছিলকারীদের বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে তিন–চার কিলোমিটার দূরে থামিয়ে দেওয়ায় আগরতলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি এখানে ঘটেনি। গত ২ ডিসেম্বর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হামলা চালায়। তারা সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে ঢুকে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন দেয় এবং সেখানে ভাঙচুর চালায়।
আজ নয়াদিল্লিতে মিছিলকারীদের আটকে দেওয়ার পর তাদের একটি প্রতিনিধিদল পুলিশ পাহারায় হাইকমিশনে গিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্মারকলিপিতে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ বন্ধ এবং তাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানানো হয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ লুটেন্স দিল্লির তিন মূর্তি ভবনের সামনে মিছিলকারীরা জড় হন। দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসে করে তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছিল। তিন মূর্তি ভবনের কাছ থেকে মিছিল শুরু হলেও চাণক্যপুরীর আগেই তাঁদের গতি রোধ করা হয়। চাণক্যপুরীর বিস্তীর্ণ এলাকাতেই বিভিন্ন দেশের দূতাবাস। বিক্ষোভকারীদের যেখানে আটকে দেওয়া হয় সেখান থেকে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন মার্গের ওপর অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের দূরত্ব চার কিলোমিটারের মতো।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন সমাজের সর্বস্তরের হাজার তিনেক মানুষ। তাঁদের হাতে ছিল বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে লেখা নানা ধরনের পোস্টার। একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘বাংলাদেশ, একাত্তর মনে করো, জুলুমবাজি বন্ধ করো’। এক পোস্টারে লেখা, ‘বাংলা বাঁচাও, বাঙালি বাঁচাও, বাঁচাও সনাতন’। যে মঞ্চে বিভিন্ন মানুষ ভাষণ দেন, সেখানে টাঙানো ব্যানারে ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘স্টপ অ্যাট্রোসিটিজ অন হিন্দুজ’।
সেই মঞ্চ থেকে সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি, কলকাতা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি ও বিজেপির সংসদ সদস্য অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন দুর্গা বাহিনীর নেত্রী সাধ্বী ঋতম্বরা প্রমুখ। বীণা সিক্রি বলেন, গতকাল সোমবারই বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ভারত আগ্রহী। তবে হিন্দুদের সুরক্ষা দিতে হবে। অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।