‘হিন্দু নিপীড়নের’ অভিযোগ তুলে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)। তারা ১০ ডিসেম্বর হাইকমিশন ঘেরাও করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
দিল্লি নাগরিক সমাজের ব্যানারে বাংলাদেশ হাইকমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নেয়া হলেও উদ্যোগটা প্রধানত আরএসএসের। সংগঠনটির দিল্লি শাখার গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনার সহপ্রধান রজনীশ জিন্দাল দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, নাগরিক সমাজের এই কর্মসূচি ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়। বাংলাদেশে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর ওপর অত্যাচারের ঘটনায় সারা ভারত ক্ষুব্ধ। ওই কর্মসূচিতে দেশের ২০০টির বেশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। বাংলাদেশ হাইকমিশনে তারা এক স্মারকলিপি পেশ করবেন। স্মারকলিপি দেবেন জাতিসংঘ, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কাছেও। প্রত্যেককে বলা হবে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধে তারা ব্যবস্থা নিক।
সংগঠকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দিল্লির সব বাজার কমিটি, আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের সংগঠন, চিকিৎসক, আইনজীবী, ছাত্রসংগঠন ও দুর্গাপূজা, ছটপূজা, রামলীলার আয়োজক এবং শিখ ধর্মস্থান গুরুদ্বার পরিচালন কমিটির সদস্যদের ওই অভিযানে অংশ নিতে বলা হয়েছে।
দেশটির ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নজিরবিহীন হামলার পরও থেমে নেই আন্দোলন। পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সংগঠনগুলো প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।
আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে যা ঘটেছে, তা ভারত সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলেছে। সরকারিভাবে তাই সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় কি না।
উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর ত্রিপুরায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার পরেই দিল্লি-ঢাকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে দৃশ্যমান চিড় ধরে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষাপটে আগামী ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।