১০ লাখ পোশাকশ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, সাভারসহ ঢাকার কাছাকাছি থাকা পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্য পাবেন। আজ বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পরিবার কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি পরিবারের কাছে পণ্য বিক্রির জন্য টিসিবির কর্মসূচি চলমান। তবে এক কোটির সবার জন্য কার্ড দেওয়া যায়নি। আপাতত পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য নতুন সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে অন্যান্য ক্ষেত্রেও তা করার বিষয়টি দেখা হবে।
পোশাকশ্রমিকদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির এ পণ্য কবে থেকে বিক্রি শুরু হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, টিসিবির পরবর্তী সময়ের বিক্রি কার্যক্রমের মধ্যে পোশাকশ্রমিকেরা থাকবেন। তবে এটা শুধু ঢাকার আশপাশের বিশেষ এলাকার জন্য। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, সাভারসহ ঢাকার কাছাকাছি থাকা পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্য পাবেন।
নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও চিনি বিক্রি করছে সরকার। খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে পাঁচ কেজি চালও বিক্রি করা হচ্ছে। ১০ লাখ পোশাকশ্রমিকের কাছে ভর্তুকি মূল্যে চিনি, ভোজ্যতেল, চাল ও মসুর ডাল বিক্রি করা হবে। এ জন্য মাসে সরকারের খরচ হবে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
এদিকে টিসিবির কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ৫১৯ কোটি টাকায় নতুন করে সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও চিনি কিনবে সরকার। স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এই সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও চিনি কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয় আজকের ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্র জানায়, ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টসের কাছ থেকে। এ জন্য খরচ হবে ৯১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ ছাড়া মেঘনা সুগার রিফাইনারি থেকে ২০ হাজার টন চিনি কেনা হবে প্রায় ২৩৩ কোটি টাকায়। এ ছাড়া আলাদাভাবে ২০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে রাজশাহীর নাবিল নাবা ফুডস থেকে। এতে সরকারের খরচ হবে প্রায় ১৯৫ কোটি টাকা।
ইংল্যান্ড থেকে কেনা হচ্ছে পাসপোর্ট বুকলেট
চলতি অর্থবছরে ইংল্যান্ড থেকে ১৫ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট এবং ১৫ লাখ লেমিনেশন ফয়েল কিনবে অন্তর্বর্তী সরকার। এগুলো আমদানিতে খরচ হবে প্রায় ৬১ কোটি টাকা। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি আজ এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে। ইংল্যান্ডের এইচআইডি সিআইডি লিমিটেড এসব সামগ্রী সরবরাহ করবে। এ ছাড়া সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) অষ্টম শ্রেণি, দাখিল অষ্টম শ্রেণি ও কারিগরি অষ্টম শ্রেণির বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের একটি ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০২টি লটে ৭৬টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজার ২৭৬ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২৭০ কোটি টাকা।