বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য, যা বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব

0
14
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম
বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো সাময়িকভাবে বিজয়ী হতে পারে। কিন্তু দ্রুতই তারা এটা বুঝতে পারবে যে তাদের বক্তব্যের কোনো সারবত্তা নেই। সামাজিক মাধ্যমে টাকা ঢেলে বক্তব্য ছড়িয়ে বা নিউইয়র্কের গণপরিবহনব্যবস্থা ও ভ্যানে ব্যানার টাঙিয়ে তাদের কোনো কাজে আসবে না।
 
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শুক্রবার (১ নভেম্বর) ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
 
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে, সে বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কী ভাবছেন, তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি (ট্রাম্প) শিগগিরই মুক্ত বিশ্বের নেতা হতে পারেন। তবে আমাদের কাজ হলো সবচেয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং যথাসম্ভব খোলামেলাভাবে সত্যটা তুলে ধরা।
 
ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দেশটিতে দলবদ্ধভাবে তাদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরিভাবে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’
 
ট্রাম্পের এই বক্তব্য নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব। তবে নেত্র নিউজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে শ্রদ্ধাপূর্ণ অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করে তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তারা একটি দারুণ সাংবাদিকতা করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে পরিচালিত কিছু মিথ্যা প্রচারণাকে তুলে ধরেছে।
 
শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা জানি, বিপ্লব (জুলাই গণ-অভ্যুত্থান) নিয়ে বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে সহিংসতা চালানোর বিষয়ে মিথ্যা বয়ান তৈরির ক্ষেত্রে এই গোষ্ঠীর ভাষ্যগুলো একটি বড় ভূমিকা রেখেছে। আমরা এটা অস্বীকার করছি না যে কিছু ধর্মীয় সহিংসতা ঘটেনি। কিন্তু সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং সেগুলো নিয়ে ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জন করা হয়েছে।’
 
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কীভাবে বিভিন্ন সংকট সামলে নিচ্ছেন, তা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেছেন প্রেস সচিব শফিকুল।
 
ড. ইউনূস কখনও হতবিহ্বল হয়ে পড়েন না উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আগস্টের শুরুর দিনগুলোতে যখন থানাগুলোতে কোনো পুলিশ ছিল না এবং তরুণ-তরুণীরা পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকা পালন করছিলেন, তখন আমি খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। পুলিশ না থাকা মানে সরকারের উপস্থিতি দৃশ্যমান হয় না। প্রতিটা দিন একটি মাসের মতো মনে হতো। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূস সব সময় শান্ত ছিলেন। যত দ্রুত সম্ভব পুলিশ যেন দায়িত্বে ফেরে, সেই ব্যবস্থা করতে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে বলেন। তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে বাংলাদেশের সমাজের মানুষের নাগরিক বোধ, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সবাই মিলে একসঙ্গে চলার মানসিকতাই বাকি সবকিছু ঠিক করে দেবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.