চাল আমদানিতে বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি শুল্ককর সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। বন্যায় চাল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় স্থানীয় বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে এ সুপারিশ করেছে এ সরকারি সংস্থা।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ‘চাল আমদানিতে শুল্ককর পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে এ শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের যুগ্ম প্রধান এ কে এম মকসুদুর আরেফীন স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এই সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার কবলে চালের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার ফলে আসন্ন উৎপাদন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশে চাল সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বর্তমানে চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে স্থানীয় উৎপাদক চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না উল্লেখ করে ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে চালের চাহিদা প্রায় ৩ দশমিক ৭ থেকে ৩ দশমিক ৯ কোটি টন। যার সিংহভাগ দেশেই উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে দেশে বর্তমানে গত এক মাসে সরু, মাঝারি ও মোটা চালের দাম যথাক্রমে শূন্য শতাংশ, ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ ও ১ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে তিন ধরনের চালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ, ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ ও ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে চাল আমদানিতে ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে গত ১৬ আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বন্যায় মোট দুদফায় ৮ লাখ ৩৯ হাজার টন চালের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার গত ২০ অক্টোবর চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে এই শুল্ক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনে। তবে বর্তমানে ট্যারিফ বেশি হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চাল আমদানিতে আমদানিকারকরা আগ্রহী না হওয়ায় সাধারণ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও চালের বাজার স্থিতিশীলকরণে চাল আমদানিতে আরোপিত সম্পূর্ণ শুল্ককর অব্যাহতি দেয়া হলেই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে চাল আমদানি উৎসাহিত হবে বলে মনে করছে ট্যারিফ কমিশন।
বর্তমান শুল্ক (২৫ শতাংশ) কাঠামোতে চাল আমদানির সম্ভাবনা ক্ষীণ এবং তা দেশের বর্ধিত চাহিদাকে পূরণ করতে পারবে না বলেও মনে করে ট্যারিফ কমিশন। এক্ষেত্রে শুল্ককর না থাকলে থাইল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত চালের দাম প্রতি কেজি ৬৬ টাকা এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত চালের দাম ৫৪ টাকা পড়বে বলেও জানানো হয় ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে।