যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ওয়াশিংটন এবং ওরেগন অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোট গ্রহণের জন্য রাখা দুটি ব্যালট ড্রপ বাক্সে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে শত শত ব্যালট নষ্ট হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের ধারণা, দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র আছে।
গতকাল সোমবার ভোরে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ডে একটি ড্রপ বাক্সকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কয়েক ঘণ্টা পর ওয়াশিংটনের ভ্যানক্যুভারে আরেকটি ড্রপ বাক্সে আগুন দেওয়া হয়।
অগ্নিসংযোগে ব্যবহার করা যন্ত্রগুলো ড্রপ বাক্সের বাইরে সংযুক্ত ছিল। ঘটনাটি তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবিআই) সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের ক্লার্ক কাউন্টির নির্বাচিত নিরীক্ষক গ্রেগ কিমসি বলেন, এটা হৃদয়বিদারক ঘটনা। ভ্যানক্যুভার শহর ক্লার্ক কাউন্টির অন্তর্গত।
সাংবাদিকদের কিমসি আরও বলেন, এটি গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।
কিমসি বলেন, দুটি ড্রপ বাক্সেই আগুন–প্রতিরোধী ব্যবস্থা সংযুক্ত ছিল। তবে ভ্যানকুভারের বাক্সটি ঠিকঠাক কাজ করেনি। এতে শত শত ব্যালট নষ্ট হয়ে গেছে।
পোর্টল্যান্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা বলেন, গতকাল দুটি অগ্নিসংযোগের ঘটনার মধ্যে যে যোগসূত্র আছে, তা প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট উপকরণ পাওয়া গেছে।
কর্মকর্তাদের ধারণা, গত ৮ অক্টোবরের ঘটনার সঙ্গে এ দুটি ঘটনার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ওই দিন ভ্যানকুভারে আলাদা একটি ব্যালট বাক্সে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। তবে ওই ঘটনায় কোনো ব্যালট ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
পোর্টল্যান্ডের কর্মকর্তাদের ধারণা, সেখানে গতকালের ঘটনায় মাত্র তিনটি ব্যালট ধ্বংস হয়েছে।
এটা হৃদয়বিদারক ঘটনা। এটা গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েকদিন আগে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাঁরা চান, এ ধরনের ঘটনা যেন নতুন করে না ঘটে।
ব্যালট ড্রপ বাক্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সমালোচনা করেছেন রিপাবলিকানরা। এ নিয়ে তাঁরা আগের এক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে আনছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ট্রাম্প মিথ্যা দাবি করেছিলেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। সে ষড়যন্ত্র তত্ত্বকেই এখন সামনে আনা হচ্ছে।
ব্যালট ড্রপ বাক্সে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সমালোচনা করেছেন রিপাবলিকানরা। এ নিয়ে তাঁরা আগের এক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে আনছেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ট্রাম্প মিথ্যা দাবি করেছিলেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। সে ষড়যন্ত্র তত্ত্বকেই এখন সামনে আনা হচ্ছে।
ড্রপ বাক্সগুলোর নকশা এমনভাবে করা হয়, যেন এগুলো নষ্ট না করা যায়। নির্বাচন কার্যালয়, গ্রন্থাগার ও সরকারি ভবনের মতো স্থাপনার সামনে এ ধরনের ব্যালট বাক্স রেখে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত ছয়টি অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এ ধরনের বাক্সের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। অঙ্গরাজ্যগুলো হলো-আরকানসাস, মিসিসিপি, মিজৌরি, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা ও সাউথ ডাকোটা।
গতকাল ওয়াশিংটনের সেক্রেটারি অব স্টেট স্টিভ হবসের কার্যালয় বলেছে, ফেরত দেওয়া ব্যালটে যদি ‘রিসিভড’ কথা চিহ্নিত না থাকে, তবে ভোটারেরা বদলি একটি ব্যালট প্রিন্ট করতে পারেন। ব্যালটটি বদলাতে স্থানীয় নির্বাচন বিভাগেও যেতে পারেন তাঁরা।
হবস বলেন, ‘আমরা আমাদের নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খর্ব করতে চায়, এমন কোনো হুমকি বা সহিংস কর্মকাণ্ড আমরা সহ্য করব না।’
তবে হবস মনে করেন, ওয়াশিংটনের নির্বাচনে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো সক্ষমতা কাউন্টির নির্বাচন কর্মকর্তাদের আছে।
আল জাজিরা