পররাষ্ট্রসচিবের যুক্তরাষ্ট্র সফর: সম্পর্ক জোরদারে ওয়াশিংটনে কাল চারটি বৈঠক

0
10
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

নানা খাতে সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিবিড় করার বিষয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে চারটি আলাদা বৈঠক হতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন এদিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসসহ যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এসব বৈঠক করবেন। ঢাকা ও ওয়াশিংটনে কর্মরত বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার রাতে পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি সোমবার থেকে নিউইয়র্কে রয়েছেন।

জানা গেছে, জন বাস ছাড়াও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিন্ডসে ফোর্ড, উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মা, সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। তিনি এদিন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। সেখানে অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

পররাষ্ট্রসচিবের আগামী শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া এবং দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী শেলবি স্মিথ–উইলসনের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।

গত ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ঢাকার কোনো কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারে যুক্ততার পাশাপাশি ভবিষ্যতে দুই দেশের সহযোগিতার নানা বিষয়ে ঢাকার আলোচনার পথ ধরে এবার ওয়াশিংটনে আলোচনা হতে চলেছে। এর আগে গেল মাসের শেষ দিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে চিরাচরিত প্রথা ভেঙে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্তে আলোচনা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিউইয়র্কে অবশ্য ড. ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে জোরালোভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চায় বাংলাদেশ। তবে অতীতের মতো নয়, নতুন পরিস্থিতিতে নতুনভাবে নতুন পথে দ্রুততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন খাতে সংস্কার, অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শ্রম ও মানবাধিকার, সুশাসন, দুর্নীতি দমন, সন্ত্রাসবাদ দমন, প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকটসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ওয়াশিংটনের ছয়টি বৈঠকে।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকেরা বলছেন, ওয়াশিংটন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতায় মনোযোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকায় গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের সহকারী মন্ত্রী ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে যে প্রতিনিধিদলটি এসেছিল, তাতে বিশেষ আগ্রহ ছিল ওয়াশিংটনের। তবে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে শ্রম অধিকার বিশেষ গুরুত্ব পাবে। বিশেষ করে আর্থিক সহযোগিতা, বিনিয়োগ, সুশাসন নানা পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম অধিকারে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ মনোযোগ থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.