ফিলিস্তিনের গাজায় অব্যাহত হামলার মধ্যেই লেবাননের বৈরুতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ স্বাস্থ্যকর্মীসহ অনেকে নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত লেবাননজুড়ে নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২৭ জন শিশু ও ২৬১ জন নারী রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। গাজা থেকে সেইদিন ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। পাশাপাশি ইসরায়েল সীমান্ত ভেদ করে দেশটিতে তাণ্ডব চালায় হামাসের যোদ্ধারা। এতে ইসরায়েলে নিহত হয়েছে অন্তত এক হাজার ২০০ জন। আহত তিন হাজারের বেশি। সেইসঙ্গে অন্তত ২৫০ জনকে জিম্মি করে হামাস। সেইদিনই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজায় যুদ্ধ চলছে। এতে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। আহত লাখের বেশি।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ গত বছর থেকে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালাচ্ছে। গোষ্ঠীটির ওপর পাল্টা আক্রমণ চালাত ইসরায়েলও। তবে সম্প্রতি হিজবুল্লাহর ওপর হামলা পরিমাণ বাড়িয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর লেবাননজুড়ে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটায় ইসরায়েল।
বিবিসি জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ব্যবহৃত কয়েক হাজার পেজারে একযোগে বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়। ওই বিস্ফোরণে নিহত কয়েকজনের জানাজার সময়ও সেখানে কিছু বিস্ফোরণ ঘটে।
এ ছাড়া ওয়াকিটকিসহ যোগাযোগের নানা ধরনের তারহীন যন্ত্র বিস্ফোরণে নিহত হয় ২০ জন এবং আহত ৪৫০ জনের বেশি। এরপর গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
এরপর ইসরায়েলি বাহিনী গত ১ অক্টোবর থেকে লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে। হামলায় ব্যাপক হতাহতের পাশাপাশি ১২ লাখের বেশি লেবানিজ ঘরছাড়া হয়েছে।
লেবাননে ইসরায়েলি হামলার কারণে নিজ নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। শুক্রবার বৈরুতের বিমানবন্দর ত্যাগ করে বিদেশি নাগরিকদের বহনকারী বেশ কয়েকটি বিমান। এসব বিমানে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা ছিলেন বলে জানা গেছে।