জাতিসংঘকে ‘অন্ধকারের ঘর’ বললেন নেতানিয়াহু

0
16
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আজ শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে জাতিসংঘকে ‘অন্ধকারের ঘর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জাতিসংঘ প্রসঙ্গে বলেন, এই ইহুদিবিদ্বেষী পিত্তে ভরা জলাভূমিতে অধিকাংশই ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতি অমানবিক। গত দশকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অনেক প্রস্তাব পাস হয়েছে। তিনি একে ভন্ডামি, দ্বিমুখী নীতি ও রসিকতা বলে মন্তব্য করেন।
 
নেতানিয়াহু আরও বলেন, যুদ্ধপরাধীরা ইরান, গাজা, সিরিয়া ও লেবাননে রয়েছে।
 
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন আমাদের লোকজনকে হত্যা করা হয়, তখন আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য কেউ একটা আঙুল তোলে না। এখন আমাদের নিজেদের রাষ্ট্র আছে আর আমরা তা নিজেরা প্রতিরক্ষা দিচ্ছি। ইসরায়েল এ যুদ্ধে জিতবে, কারণ আমাদের আর কোনো পথ নেই।’
 
নেতানিয়াহু বক্তব্য শুরু করেন জাতিসংঘে তাঁর আসার যৌক্তিকতা তুলে ধরে। তিনি বলেন, জাতিসংঘে তিনি আসতে চাননি। কিন্তু বাধ্য হয়ে তাঁকে আসতে হয়েছে। অন্যান্য বিশ্বনেতাদের মিথ্যা ও অপবাদের জবাব দিতে তিনি এখানে এসেছেন।
 
নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে গত ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলাকে ইহুদি নিধনের (হলোকাস্ট) সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি হামাসের হাতে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার কথা বলেন।
 
নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে লেবাননে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইরানের যেকোনো স্থানে হামলা করতে সক্ষম ইসরায়েল। তিনি হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত লড়াই করার কথা বলেন। তিনি হামাসকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।
 
গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা গাজায় পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি না। আমরা সেখানে নিরস্ত্রীকরণ এবং উগ্রবাদমুক্ত এলাকা চাই। ইসরায়েল সরকার সেখানে আঞ্চলিক ও অন্য নেতাদের আঞ্চলিক বেসামরিক নেতাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে তাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখাতে হবে। কিন্তু হামাসকে কখনোই মেনে নেবে না ইসরায়েল।’
 
নেতানিয়াহু প্রশ্ন করেন, আপনারা কাকে বেছে নেবেন? ইসরায়েল, গণতন্ত্র ও শান্তির পাশে দাঁড়াবেন নাকি ইরানের সঙ্গে থাকবেন?
 
নেতানিয়াহু বলেন, হিজবুল্লাহর হামলা থেকে ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ব্যক্তিরা যতক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ না হচ্ছেন, ততক্ষণ ইসরায়েল বিশ্রাম নেবে না। গাজা প্রসঙ্গে বলেন, সেখানে হামাসের ৪০ হাজার সেনার প্রায় অর্ধেক তাঁদের হাতে নিহত বা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের ৯০ শতাংশ রকেট ধ্বংস করা হয়েছে।
 
ইরানকে হুমকি দিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ইরান যদি হামলা করে, তবে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালাবে।
 
নেতানিয়াহু জাতিসংঘকে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে আহ্বান জানান। হুমকি দিয়ে বলেন, ইসরায়েল কখনো ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেবে না। তিনি হামাস ও হিজবুল্লাহকে পরাজিত করার কথা বলেন।
 
পরে জাতিসংঘের সমালোচনা করে নেতানিয়াহু বলেন, জাতিসংঘ অন্ধকারের ঘর। তিনি ইসরায়েলকে অন্য দেশের মতো সমানভাবে দেখার কথা বলেন।
 
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিবাদে অনেক বিশ্বনেতা সাধারণ অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।
 

বিবিসি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.