পোশাক শিল্পের নিরাপত্তায় সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে যৌথ অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশ।
এছাড়া মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে কারখানা খোলা রাখতে মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
এর আগে সচিবালয়ে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের পরিস্থিতি অবহিত করতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৈঠক শেষে অভিযানের কথা সাংবাদিকদের জানান বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, শ্রম ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পোশাক শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি জানানো হয়েছে।
শ্রম উপদেষ্টা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো পক্ষ যদি অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এই আন্দোলনের পেছন থেকে নেতৃত্ব দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং খতিয়ে দেখা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
সচিবালয়ে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান প্রমুখ।
জানা যায়, গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে চাকরি স্থায়ীকরণ, বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং পুরুষ শ্রমিক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগরা, নাওজোর, কোনাবাড়ী, বোর্ডবাজার ও টঙ্গীতে বিক্ষোভ শুরু হয়। এতে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কয়েকটি স্থানে থেমে থেমে এবং কয়েকটি স্থানে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় ভোগান্তিতে পড়ে ওই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও পথচারীরা। অবস্থা বেগতিক দেখে ৩০টি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তাজকিয়া এ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (মানবসম্পদ) হেমায়েত উদ্দিন বলেন, সকালে বহিরাগতরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে কারখানার প্রধান ফটকে ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুর ও ক্ষতি এড়াতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছি।
অপরদিকে টঙ্গীতে চাকরি স্থায়ীকরণ, বেতন বৃদ্ধিসহ ৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন বাটা সু-কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্রমিকরা। সোমবার সকাল ৯টা থেকে টঙ্গীর বাটার শ্রমিকরা কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অবস্থান করছেন। কারখানার মেইন গেট বন্ধ রয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, চাকরি স্থায়ীকরণ, বেতন বৃদ্ধি, পারিবারিক চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন তারা। দাবি আদায় হলে কাজে যোগ দেবেন তারা।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, চাকরিতে বৈষম্য ও পুরুষ শ্রমিকদের নিয়োগে অগ্রাধিকারের দাবি জানিয়ে কয়েকশ চাকরিচ্যুত শ্রমিক নয়টি কারখানায় ভাঙচুর চালান। বিক্ষুব্ধরা টঙ্গীর বিসিকের একটি সড়কে অবস্থান নেন। পরে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।