ফের হোঁচট খেলো রিয়াল, নিষ্প্রভ এমবাপ্পে

0
46
লা লিগা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ

নতুন মৌসুমে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়েই বারবার নিজেদের হারিয়ে ফেলছে বর্তমান লা লিগা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম ম্যাচে মায়োর্কার মাঠ থেকে জয় আনতে ব্যর্থ হওয়া দলটি তৃতীয় ম্যাচেও একইরকমভাবে হতাশ হয়েছে। পুঁচকে লাস পালমাসের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে গ্যালাক্টিকোরা। পুরো ম্যাচেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দিবাগত রাতে গ্রান কানেরিয়া স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদকে আতিথ্য জানায় লাস পালমাস। ম্যাচ শুরুর পঞ্চম মিনিটেই রিয়ালকে হতাশ করেন ২০ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার আলবের্তো মোলেইরো। সতীর্থের পাস পেয়ে বক্সে রিয়ালের দুই ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে গোল করে পালমাসকে এগিয়ে দেন আলবের্তো।

গোল খেয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলে লাস পালমাসকে চেপে ধরার চেষ্টা করে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সম্মিলিত প্রচেষ্টা, কাউন্টার প্রেসিং ও জমাট রক্ষণে রিয়ালের সেসব প্রচেষ্টা অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিতে থাকে স্বাগতিকরা। শুধু তা-ই নয়, প্রতিপক্ষের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে পজেশনাল ফুটবলে বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করে লাস পালমাস, পাশাপাশি আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে রিয়ালকেও অস্বস্তিতে রাখে তারা।

২৫তম মিনিটে প্রথম গোলে শট নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফাউল আদায় করেন ভিনিসিয়াস। সেখান থেকে ফেদেরিকো ভালভার্সে দারুণ একটি ফ্রি কিক নিলেও অসাধারণ দক্ষতায় শটটি প্রতিহত করে ব্যবধান ধরে রাখেন লাস পালমাস গোলরক্ষক জ্যাসপার সিলিসেয়। ম্যাচের ২৮তম মিনিটে আক্রমণে উঠে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে শটে জোর না থাকায় সহজেই বলটি লুফে নেন সিলিসেন।

মিনিট দশেক পর বক্সের বেশ বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট হানেন আন্টোনিও রুয়েডিগার, তবে বাঁ পাশের পোস্টঘেঁষে বল গোলের ঢোকার মুখে ঝাঁপিয়ে হাত প্রসারিত করে সেটি বাইরে বের করে দেন সিলিসেন। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় লাস পালমাস।

দ্বিতীয়ার্ধে একাদশে দুই পরিবর্তন করে শিষ্যদের মাঠে নামান কার্লো আনচেলত্তি। আক্রমণভাগের ডান উইংয়ে ব্রাহিম দিয়াসকে রেখে রদ্রিগোকে নামান তিনি। এছাড়া লেফট ব্যাক ফেরলঁ মদিঁর পরিবর্তে মাঠে নামেন ফ্রান গার্সিয়া। প্রথমার্ধ যেখানে শেষ হয়, দ্বিতীয়ার্ধ সেখান থেকেই শুরু করে দুই দল। উভয় পক্ষই বল দখলে নিয়ে আক্রমণে উঠতে এবং প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করতে মনোযোগী হয়।

এরমধ্যে ৫১তম মিনিটে প্রথম পরিষ্কার শট নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। বাঁ পাশ দিয়ে উঠে গিয়ে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে জোরালো শট নেন ভিনিসিয়াস। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা তার কাজ অনেক কঠিন করে দিলে শট ঠেকাতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি সিলিসেনের। পরের মিনিটে এমবাপ্পেও আক্রমণে উঠে ডিফেন্ডারদের চ্যালেঞ্জর মুখে পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে হতাশাজনক শট দেন।

এরপর ক্রমাগত চাপ দিয়ে ৬৭তম মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার সময় বল হাতে লাগে আলেক্স সুয়ারেসের। ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি দিয়ে বসেন এই ডিফেন্ডার। আর পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনিসিউস। সঠিক দিকে ঝাঁপ দিয়েও ভিনির উপরের দিকে নেয়া স্পট কিক রুখতে ব্যর্থ হন সিলিসেন।

নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট বাকি থাকতে বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শটে রিয়ালের জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন পালমাসের মিডফিল্ডার ভিতি। তবে সেটি অফসাইড হওয়ায় হার থেকে বেঁচে যায় রিয়াল। এ ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেলেও মিস করে রিয়ালের জার্সিতে লা লিগায় গোলের অপেক্ষা বাড়ালেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। লিগে তিন ম্যাচ খেলে এখনও জালের দেখা পাননি না ফরাসি তারকা।

এর ফলে মৌসুমের শুরুতেই চির প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়লো রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম তিন ম্যাচেই ২-১ ব্যবধানে জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে বার্সেলোনা, দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ভিয়ারিয়ালের অবস্থান তাদের পরই, আর সমান ম্যাচে দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে সেল্টা ভিগো।

তৃতীয় রাউন্ড শেষে টেবিলের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, রিয়াল মাদ্রিদ ও লেগানেসের পয়েন্ট সমান। দুই ড্র ও এক জয়ে তাদের সবার পয়েন্ট ৫।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.