প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, নির্বাচন নিয়ে সংলাপ চেয়েছে বিএনপি

0
52
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। আজ বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে, ছবি: বিএনপির সৌজন্যে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে একটা নির্বাচনের দিকে যেতে পারবে। তবে তাঁরা আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো তারিখের কথা বলেননি।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভিত্তিক সংলাপ শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে অনুরোধ করেন বিএনপি নেতারা।

আজ বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। সেখানে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রায় সোয়া ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে মহাসচিবের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল যমুনায় গেছে।

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় সোয়া ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী হয়েছি যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তরিকতা, দেশপ্রেম ও যোগ্যতা দিয়ে খুব দ্রুত একটা স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারবে। একই সঙ্গে তারা একটা নির্বাচনের দিকে যেতে পারবে। প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

কয়েক দিন ধরে দলীয় কর্মসূচিগুলোয় অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন বিএনপির মহাসচিব।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর কবে থেকে বৈঠক শুরু হবে, তা জানতে চান সংবাদকর্মীরা। জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওনারাই (অন্তর্বর্তী সরকার) বলবে, তারা কত দিনের মধ্যে এটা পারবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে পর্যায়ক্রমে।’

বিএনপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো তারিখ উল্লেখ করেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা কোনো তারিখ বলিনি। প্রয়োজনে ওনারাই তারিখ বলবে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ১২ আগস্ট তাঁর সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছিলেন বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সাত নেতা।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিরা মূলত বর্তমান সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের ভাবনা ও নির্বাচন নিয়ে তাঁদের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। তাঁরা (বিএনপি নেতারা) বলেছেন যে এই সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর ব্যাপারে তাঁদের পূর্ণ সমর্থন আছে। ভবিষ্যতেও এই সমর্থন থাকবে। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ব্যাপকভিত্তিক সংলাপ শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে তাঁরা অনুরোধ করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ-ও বলা হয়, তাঁরা (বিএনপি নেতারা) দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও জানতে চান এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে শঙ্কা ও সম্ভাবনা আছে, সে ব্যাপারেও তাঁরা একমত পোষণ করেন। সবশেষে তাঁরা এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে বর্তমান সরকার সংস্কার, নির্বাচন–সম্পর্কিত ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেবে, সেটা নিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করবেন এবং তাঁরা সেটার একটি সমন্বিত অংশীদার হবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.