জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

0
69
সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী সংঘর্ষ-সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আড়াল করতে সরকার দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেছেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। পাশাপাশি গ্রেপ্তারদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার এবং শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতেও দাবি জানানো হয়েছে।

বুধবার রাজধানী আল-রাজি কমপ্লেক্সের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে’ প্রতিবাদ সমাবেশে মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন।

এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সেখানে আগেই থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন। রাখা হয় প্রিজন ভ্যান। পরে আল-রাজি কমপ্লেক্সের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হত্যার ঘটনার প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই হত্যা দায় সরকার এবং সরকারি দলকে বহন করতে হবে। পাকিস্তানের আমলে ব্লক রেইড করে যেভাবে ঘরে-ঘরে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন ২০২৪ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্র, যুবক ও তরুণদেরকে ব্লক রেইড করে পাকিস্তানের আমলের মতো তাদের তুলে নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দেশের মানুষ, ছাত্র ও তরুণরা সরকারকে গুড বাই জানিয়ে দিয়েছে। এখন সরকার টিকে আছে কেবল মাত্র প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে। সরকারের ভাগ্য চিকুন সুতার উপরে ঝুলছে।

সাইফুল হক বলেন, সরকার এই হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করতে তারা দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এটাকে আড়াল করতে গিয়ে তারা বলির পাঠা হিসেবে বিএনপি ও জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। ইতোমধ্যে সন্ত্রাস দমনের আইনে জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করবার তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, শত শত শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। এত লাশের মিছিল, সরকার এত লাশ তৈরি করেছে, তাকে ঢাকতে পারছে না। তাকে ঢাকার জন্য আজ আমরা দেখছি, তারা নানা রকম রাজনৈতিক কৌশল ব্যবহার করছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই, হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। গ্রেপ্তারদের মুক্তি দিতে হবে, সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে হবে।

তিনি বলেন, সহিংসতা হয়েছে, অনেকগুলো স্থাপনা ভেঙেছে- কারা করেছে? স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত চাই। কিন্তু তার আগেই এসব কারা করেছে, তার দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন! সব দোষ তারা (সরকার) আন্দোলনকারী ও বিরোধী দলের ওপর দিয়েছেন। সরকার একদিকে বলে, এই কাজ জামায়াত-শিবির করেছে। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে! অন্যদিকে তারা হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে। তাদের (শিক্ষার্থী) ৮৭ থেকে ৯০ ভাগ রাজনৈতিক পরিচয় নেই।

জোনায়েদ সাকি বলেন, সমাবেশ পণ্ড করা, সমাবেশের ওপর হামলা, মাইক কেড়ে নেওয়া, সারাদেশে নির্বিচারে যে হামলা চলছে এবং শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এ সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.