কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাণহানির প্রতিবাদে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে অভিভাবকদের মৌন অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। তবে ঢামেকের প্রধান ফটকের সামনে তাদের অবস্থান করতে দেয়নি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। অনেকেই উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উদ্দেশে বলেন, যখন আমাদের সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছিল, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন। আপনারা কেন গুলি ছুড়েছেন।
মৌন অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢামেকে যান শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক, লেখক ও গবেষক রাখাল রাহা। তিনি বলেন, তারা সবাই মিলে ঢাকা মেডিকেলের গেটের সামনে যেতেই পুলিশ এসে ঘিরে দাঁড়ায় এবং কর্মসূচি পালন না করার কথা বলে। পুলিশকে জানানো হয়, এখানে কিছু সময় মৌন অবস্থান করে আন্দোলনে আহতদের দেখতে যাবেন। পুলিশ বলেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুমতি ছাড়া এখানে কোনো কিছুই করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টার করি, এটা কোনো সমাবেশ নয়। তবুও পুলিশ অভিভাবকদের ঢাকা মেডিকেল ত্যাগ করার জন্য চাপ দিচ্ছিল।’
এ সময় বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ‘আমরা শোক প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম, যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের জন্য। কিন্তু পুলিশ সেটাও করতে দেয়নি। তারা আমাদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ করছে। পুলিশের এমন আচারণে ধিক্কার জানাই।’
রাবেয়া বশরী নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম মাত্র ১০ মিনিটের জন্য অবস্থানের অনুমতি দিতে। পুলিশ আমাদের দাঁড়াতে দেয়নি। প্রতিবাদ জানাতে যে কোনো জায়গায় দাঁড়ানোর অধিকার আমাদের আছে। সংবিধান এর নিশ্চয়তা দেয়।’ আরেক অভিভাবক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়টি সুন্দরভাবে সমাধান করা যেত। কিন্তু আন্দোলনকারীদের কোন হত্যা করা হলো। ওরা কীভাবে মারা গেল, সেটা আমরা জানতে এসেছি।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপির এডিসি (রমনা জোন) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, অভিভাবকরা ডিএমপি থেকে অনুমতি না নেওয়ায় তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। কর্মসূচি পালন না করতে পেরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনকারীদের দেখতে যান অভিভাবকরা।