রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য চীনের মধ্যস্থতা চায় ইউক্রেন

0
44
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ফাইল ছবি: এএফপি

রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে চীনের সহায়তা চেয়েছে ইউক্রেন। এ জন্য গত মঙ্গল ও বুধবার বেইজিং সফর করেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা।

বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে ‘বেশ গভীর ও নিবিড়’ আলোচনা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান কুলেবা। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আলোচনায় বসতে সত্যিই আন্তরিক হলে ইউক্রেনও তাতে আপত্তি করবে না। কিন্তু রাশিয়ার দিক থেকে এখন পর্যন্ত এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’

অন্যদিকে চীন মনে করছে, যুদ্ধ বন্ধের জন্য মস্কো-কিয়েভ সরাসরি আলোচনা শুরু করার ‘সব শর্ত’ এখনো পূরণ হয়নি। আলোচনার সময় এখনো আসেনি। এমনটাই মন্তব্য করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করতে এবারই প্রথম চীনের সহায়তা চেয়েছে কিয়েভ। এ ক্ষেত্রে সময়টাও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এমন একটা সময়ে কুবেলা বেইজিং সফর করলেন, যখন রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু করার জন্য নিজেদের পক্ষে অনুকূল আন্তর্জাতিক পরিবেশ তৈরির জোর চেষ্টা শুরু করছে কিয়েভ।

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গত মাসে সুইজারল্যান্ডে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণকারী ৮০টির বেশি দেশ ইউক্রেনের ‘সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা’ শান্তি আলোচনার ভিত্তি বলে মত দিয়েছে। অর্থাৎ এর মধ্য দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের পক্ষে একটি বড় সমর্থন পাওয়া গেছে।

চলতি বছর আরেকটি শান্তি সম্মেলন আয়োজনের কথা ভাবছে ইউক্রেন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের কাছে নিজেদের খাদ্যনিরাপত্তা, জ্বালানির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের সাফল্যের কথাও প্রচার করছে দেশটি। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সম্ভাব্য ভোটাভুটিতে নিজেদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন বাড়াতে এসব তৎপরতা চালাচ্ছে কিয়েভ।

এদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় কিছু শর্ত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর দাবি, রুশ সেনারা ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলের আংশিক দখল নিয়েছে, কিয়েভকে সেগুলোর দাবি ছেড়ে দিতে হবে। ইউক্রেন কখনো পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। দেশটির সামরিক শক্তিও কমাতে হবে।

কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এখনো যুদ্ধ নিয়ে নিজের লক্ষ্যে অটল আছেন। তিনি হারানো ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে চান। তবে সম্প্রতি তাঁর এ মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে। তিনি মনে করছেন, আলোচনার মাধ্যমেই তাঁর সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। সম্প্রতি জেলেনস্কি বিবিসিকে বলেন, ‘ইউক্রেনের হারানো সব ভূখণ্ড সামরিকভাবে পুনরুদ্ধার করার দরকার নেই। এ ক্ষেত্রে কূটনীতি আমাদের সহায়তা করতে পারে।’

জেলেনস্কির এমন মনোভাবকে স্বাগত জানিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এসব কথার সুনির্দিষ্ট অর্থ কী, তা এখনো আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তিনি (জেলেনস্কি) কী পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছেন, সেটাও জানা বাকি।’

আল জাজিরা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.