৩০ কর্মদিবসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের

0
54
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন স্থগিত করে সংবাদ সম্মেলন। ফাইল ছবি

আট দফা দাবি জানিয়ে ৩০ কর্মদিবসের সময় বেঁধে দিয়ে সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের পাঁচ নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন মোকারম হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সুজন কুমার ভৌমিক, রেজওয়ান গাজী মহারাজ, তোফায়েল আহমেদ ও মমিনুুল হক। দাবিগুলো হলো কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিরাপরাধ শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহার, কারফিউ তুলে নেওয়া, ইন্টারনেট সচল করা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া, ক্যাম্পাস থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরিয়ে নেওয়া, শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের ব্যবস্থা করা।

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে আট দফা দাবি মানা না হলে আবার মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দিয়ে মোকারম হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ধীরে ধীরে সরকার আমাদের দাবিগুলো মেনে নিচ্ছে। অহিংস আন্দোলনকে তৃতীয় কোনো গোষ্ঠী সহিংস আন্দোলনে রূপ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সরকার ও প্রশাসনের কাছে যে আট দফা দাবি রয়েছে, সেটা না মেনে নিলে আমরা আবার আন্দোলনে নামব।’

কারও ভয়ে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন কুমার ভৌমিক বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট কোনো সমন্বয়ক কমিটি ছিল না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমেছি। সরকার আমাদের এক দফা দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আশা করছি, বাকি দাবিগুলোও পূরণ করবে। আমরা দেখেছি, এই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অনেকের রক্ত ঝরেছে। আর কোনো মায়ের বুক যাতে খালি না হয়, তাই আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩০ কার্যদিবসের আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতে ‘কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন’–এর ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। ১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের একাংশ সেই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। তাঁদের অভিযোগ ছিল, সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়েছে ওই সমন্বয়ক কমিটি। এরপর থেকে যাবতীয় কর্মসূচি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে পালিত হচ্ছে। ‘কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন’ কমিটিকে যাঁরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তোফায়েল আহমেদ ও সুজন কুমার ভৌমিক ছিলেন অন্যতম। রেজওয়ান গাজী মহারাজ সেই অবাঞ্ছিত কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। হল কক্ষ ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাইয়ুম মিয়ার করা মামলায় তোফায়েল আহমেদ ও মমিনুল হকের নাম আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.