আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট হারিকেন বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়ে জ্যামাইকার দিকে এগোচ্ছে। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, বেরিলের আঘাতে গ্রেনাডাইনস দ্বীপের প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের তথ্যমতে, জ্যামাইকা, গ্র্যান্ড কেম্যান, লিটল কেম্যান এবং কেম্যান ব্র্যাকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় আগামীকাল বুধবার বিকেলের দিকে জ্যামাইকার কাছাকাছি বা তার ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে বেরিল। বৃহস্পতিবার কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ এবং শুক্রবার মেক্সিকোর ইউকাটান উপদ্বীপ অতিক্রম করবে এই ঘূর্ণিঝড়।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবারের শেষ দিকে বেরিল আটলান্টিকে ক্যাটাগরি-৫ হারিকেনে রূপ নেয়। মঙ্গলবার শক্তি কমে এটি ঘণ্টায় ২৭০ কিলোমিটার গতিবেগে ছুটতে থাকে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাণ্ডবের পর শক্তি সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হলেও ক্যাটাগরি-৪ ঘূর্ণিঝড় রূপ নিয়ে আছে বেরিল।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গ্রেনাডায় তিনজন এবং সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডাইনে একজনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তর ভেনিজুয়েলায় আরও দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেখানে নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। ওই এলাকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
হারিকেনের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে গ্রানাডা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডিকন মিচেল বলেছেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ। দ্বীপের বাড়িঘর এবং ভবনগুলো প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সড়কে চলাচলের অবস্থা নেই। আরও প্রাণহানীর শঙ্কা রয়েছে।
সর্বশেষ ২০ বছর আগে দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবিয়ানে আঘাত হানা শক্তিশালী হারিকেন ছিল ‘ইভান’। এতে গ্রেনাডায় কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বেরিল অতিক্রমের সময় জ্যামাইকায় ৬ থেকে ৯ ফুট উচ্চতার জোয়ার বইতে পারে। সেই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের পরিচালক মাইকেল ব্রেনান বলেছেন, বেরিল সরাসরি জ্যামাইকার পথে রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা জ্যামাইকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। সবাইকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
জ্যামাইকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন। এর আগে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য শক্তি এবং প্রভাব পর্যালোচনার পর হলনেস আগামী সপ্তাহের জন্য পুরো জ্যামাইকাকে একটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেন।