ইরানে চলছে ভোট গণনা, এগিয়ে সাইদ জালিলি

0
78
সাঈদ জালিলি ও মাসুদ পেজেসকিয়ান। ছবি: সংগৃহীত
ইরানের শুক্রবার (২৮ জুন) অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া ফল অনুযায়ী এগিয়ে আছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সাইদ জালিলি।
 
ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শনিবার (২৯ জুন) সকালে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। নির্বাচনে জালিলি এবং একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে।
 
ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মোহসেন এসলামি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩ লাখের বেশি ভোট গণনা হয়েছে। এর মধ্যে জালিলি পেয়েছেন ৪২ লাখ ৬০ হাজার ভোট। সংস্কারপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী ও আইনপ্রণেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ৪২ লাখ ৪০ হাজার ভোট।
 
অফরদিকে কট্টরপন্থী প্রার্থী ও পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ পেয়েছেন ১৩ লাখ ৮০ হাজার ভোট। আরেক কট্টরপন্থী মোস্তফা পুরমোহাম্মদি পেয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি ভোট।
 
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ছয়জনকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিল খামেনির নেতৃত্বে গঠিত কট্টরপন্থী কর্তৃপক্ষ। পরে নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন দুই কট্টরপন্থী। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে লড়াই করেছেন চার প্রার্থী। এর মধ্যে কট্টরপন্থী তিনজন এবং একজন সংস্কারপন্থী।
 
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল। ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৮ শতাংশ। আর গত মার্চে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪১ শতাংশ।
 
নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তবে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে। তখন প্রথম দফার নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে।
 
ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে। প্রথম দফার ফল ঘোষণার পর প্রথম যে শুক্রবারটি আসবে, সেদিনই হবে দ্বিতীয় দফার ভোট।
 
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের প্রেসিডেন্টের ভূমিকা বড় করে দেখা হলেও দেশের প্রকৃত ক্ষমতা থাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার হাতে। তাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের কোনো বদল আসার সম্ভাবনা নেই।
 
নিয়ম অনুযায়ী, ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল আগামী বছরের জুনে। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চার বছরের মেয়াদ শেষে ভোট অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু গত ১৯ মে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন। সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে আগাম নির্বাচনের বিকল্প ছিল না।
 
একদিকে গাজায় ইরানের মিত্রগোষ্ঠী হামাস এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাতকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক উত্তেজনা চলছে। তা ছাড়া পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ইরানের ওপর পশ্চিমা চাপ জোরালো হচ্ছে। এর মধ্যে শুক্রবার ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.