২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ছয় মাস শেষ হতে চলল। নতুন শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামো এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অথচ এ মূল্যায়ন কাঠামোর আদলেই আগামী ৩ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন। সেই ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সাধারণ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নির্দেশনাগুলো হলো—
১.
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২–এর আলোকে আগামী ৩/০৭/২০২৪ থেকে ৩০/০৭/২০২৪ পর্যন্ত ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য ষষ্ঠ থেকে নবমে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার সময়সূচি ও বিষয়ভিত্তিক সর্বশেষ কোন অভিজ্ঞতা/ অধ্যায় পর্যন্ত ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের আওতায় আসবে, তা ইতিমধ্যেই প্রেরণ করা হয়েছে;
২.
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরুর পূর্বেই, অর্থাৎ আগামী ৩/৭/২০২৪ তারিখের মধ্যে সম্পাদিত সব বিষয়ের শিখন অভিজ্ঞতার পারদর্শিতার নির্দেশকগুলো নৈপুণ্য অ্যাপে ইনপুট দিতে হবে;
৩.
মূল্যায়ন কার্যক্রম চলাকালে, অর্থাৎ ৩ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত নির্দিষ্ট দিবসে মূল্যায়ন কার্যক্রম ব্যতীত ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির কোনো শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না;
৪.
প্রেরিত সময়সূচি অনুসারে নির্ধারিত দিনে একটি বিষয়েরই মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ নির্ধারিত বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রম নির্ধারিত দিনেই শেষ করতে হবে। পূর্বের মতো কোনো শ্রেণির একটি বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রম একাধিক দিনে সম্পন্ন করা যাবে না;
৫.
বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম নির্ধারিত দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। তবে মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করে একটি মধ্যবর্তী বিরতি দেওয়া যেতে পারে।
৬.
মূল্যায়ন কার্যক্রমে হাতে-কলমে কাজ এবং কার্যক্রমভিত্তিক লিখিত অংশ উভয় ধরনের কার্যক্রম আছে। হাতে-কলমে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও লিখিত অংশের জন্য প্রয়োজনীয় খাতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহ করতে হবে;
৭.
বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নে উপকরণে বৈচিত্র্য রয়েছে, যা বিস্তারিত মূল্যায়ন নির্দেশিকায় উল্লেখ করা থাকবে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক উপকরণ সরবরাহের জন্য সাধারণ নির্দেশনাগুলো হলো:
৮.
উপকরণ সরবরাহের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, কোনো উপকরণই যেন ব্যয়বহুল না হয়। রিসাইকেল, রিউইজ, আপসাইকেল উপকরণ ব্যবহার করতে হবে।
৯.
অভিভাবক বা শিক্ষার্থীকে উপকরণ সরবরাহের জন্য কোনো নির্দেশনা প্রদান করা যাবে না;
১০.
মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের নিকট থেকে সীমিত পরিমাণে মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা ফি নেওয়া যেতে পারে;
১১.
মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরুর পূর্বের দিন নৈপুণ্য অ্যাপের প্রতিষ্ঠান ড্যাশবোর্ড (master.noipunno.gov.bd) এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশনা মূল্যায়ন কার্যক্রমের সময়সূচি অনুসারে নির্ধারিত দিনের পূর্বের দিন পাওয়া যাবে;
১২.
মূল্যায়ন নির্দেশনায় শিক্ষকের জন্য করণীয়, শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয়, মূল্যায়নপত্র, শিক্ষকের জন্য পর্যবেক্ষণ চেকলিস্ট ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক উপকরণের বিবরণ থাকবে;
১৩.
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা শেষে শিক্ষার্থীর অর্জিত পারদর্শিতার রেকর্ডের ভিত্তিতে নৈপুণ্য অ্যাপে পারদর্শিতার নির্দেশক (পিআই) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইনপুট দিতে হবে।
ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের সূচিতে আবার পরিবর্তন
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি গত ১৪ মে প্রকাশ করা হয়। তবে পরে দুই ধাপে এ সূচি পরিবর্তন করে আগামী ৩ জুলাই এ কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন সূচিতে আবার পরিবর্তন করা হয়েছে। গত সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পরিবর্তিত এ সময়সূচি কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর প্রকাশ করেছে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির জন্য ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সময়সূচি ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ১৩ জুলাইয়ে হওয়ায় এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। ১৩ জুলাইয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান, সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি, অষ্টম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি এবং নবম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়গুলোর ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের কার্যক্রম ৩ আগস্ট (শনিবার) গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।