কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে রাতভর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মাঝে ভীতি বাড়ছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে টেকনাফের হ্নীলা থেকে শাহপরীর দ্বীপের নাফ নদী সীমান্তে মিয়ানমারের ওপার থেকে ভেসে আসা মর্টার শেলের শব্দ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এতে করে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের দিকে গুলি চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে গত ১৪ দিন ধরে। নাফ নদী রুটে যোগাযোগ বন্ধ থাকায় দ্বীপটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে দ্বীপে বসবাকারী প্রায় ১০ হাজার মানুষ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
টেকনাফ সীমান্তে বসবাসকারী নুর করিম জানান, রাতভর গোলার শব্দ শোনা গেছে সীমান্তে। ভারী গোলার শব্দও পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্তের পারে জীবন শেষ হওয়ার পথে। আগে কখনো এমন গোলার ভয়াবহ শব্দ শোনেননি তিনি। গতকাল রাত থেকে আজ (শনিবার) ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় গোলার শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।
সীমান্তের লোকজন জানান, কয়েক মাস ধরে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। এতে টেকনাফের হ্নীলা থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত সীমান্ত অঞ্চলে মিয়ানমারের ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এতে সীমান্তবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হ্নীলার বাসিন্দা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, আবারও রাতভর নাফ নদের ওপার থেকে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। মনে হচ্ছে, মাটি খুড়ে কেউ নিয়ে যাচ্ছে।
টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুস বলেন, সীমান্তে রাতে খুব বেশি গুলির শব্দ শোনা গেছে। কয়েকদিন ধরে ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সীমান্তের বসবাসকারী লোকজন যাতে ভয় না পায়, সেজন্য তাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।
টেকনাজের ইউএনও আদনান চৌধুরী বলেন, এখনো মিয়ানমার সীমান্তে গুলি বর্ষণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে লোকজন যাতে ভয় না পায়, সেজন্য তাদের শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। তাছাড়া টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে শিগগিরই বিকল্প নৌপথ চালুর চেষ্টা চলছে।