মিন্টুর আটদিনের রিমান্ড তিনদিনে শেষ করে যে পথে ডিবি

0
75
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম ওরফে মিন্টু।
ভারতের কলকাতায় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম ওরফে মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। কিন্তু তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেই গত ১৬ জুন তাকে আদালতে সোপর্দ করে তদন্তকারী সংস্থা ডিবি। আর আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
 
ওইদিন আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা উল্লেখ করেন যে, গত ৫ জুন হত্যা মিশনের সমন্বয়ক আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন যে, মে মাসে ভারতে আনারকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় মিন্টু আর্থিক লেনদেনে জড়িত ছিলেন। মিন্টুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু তাকে (মিন্টু) অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত করেছে।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিমুল ভূঁইয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, মিন্টু গত ৫ অথবা ৬ মে হোয়াটসঅ্যাপে আকতারুজ্জামান শাহিনের সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কথা বলেছিলেন। একইসঙ্গে বাবুও স্বীকার করেছেন যে, হত্যাকাণ্ডের পর অর্থ লেনেদেনের বিষয়ে তিনি শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দেখা করেছেন।
 
এমনকি বাবু ও শিমুল ভূঁইয়া মোবাইল ফোনে হত্যার ছবিও আদান-প্রদান করেন।
 
কিন্তু রিমান্ডে এসব ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সব প্রশ্নেই নিজস্ব ব্যাখ্যা দেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম (মিন্টু)। একইসঙ্গে সংসদ সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
 
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাইদুল করিমকে কয়েকটি কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে আনোয়ারুলের মৃত্যুর খবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানার আগেই তিনি জেনেছেন বলে যে তথ্য এসেছে, সেটা যাচাই করা। এছাড়া গত ১৩ মে কলকাতার ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী শিমুল ভূঁইয়া এবং ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামালের সঙ্গে সাইদুল করিমের কী ধরনের যোগাযোগ ছিল, সেটা নিশ্চিত হতে চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে তার মুঠোফোন জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এখন সেই ফরেনসিক প্রতিবেদনের দিকে তাকিয়ে তদন্তকারীরা।
 
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ফরেনসিক প্রতিবেদন ও তার দেওয়া ব্যাখ্যা যাচাই–বাছাইয়ের পর হত্যাকাণ্ডে থাকা-না থাকার ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
 
প্রসঙ্গত ১১ জুন বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল করিমকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে আটক করে ডিবি। পরে ১৩ জুন তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে মিন্টু দাবি করেন যে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাওয়ায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। পরে ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্তু তিনদিনে জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করে ঈদের আগের দিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.