বাংলাদেশের পর নেপালের বিপক্ষেও শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। আরেকটু হলেই ক্লাসেন-মিলারদের হারিয়ে দিচ্ছিল নেপাল। আইসিসি সহযোগী দলটির বিপক্ষে হারতে হারতে শেষ মুহূর্তে বেঁচে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। জিতল মাত্র ১ রানে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনের জন্ম দিতে শেষ ২ বলে ২ রান দরকার ছিল নেপালের। তবে এত কাছে গিয়েও ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানো হলো না রোহিত পাউডেলের দলের। নেপালিদের হৃদয় ভেঙে ন্যূনতম ব্যবধানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শনিবার সেন্ট ভিনসেন্টের কিংস টাউন আর্নোস ভ্যালে স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নেপালের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানে থামতে হয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। জবাবে ওপেনিং জুটিতে দারুণ শুরুর পরও ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রানে থামে নেপালের ইনিংস। ১ রানের হারে স্বপ্নভঙ্গ হয় হিমালয়ের কন্যা খ্যাত দেশটির।
লক্ষ্যতাড়ায় শুরুটা ভালো করে নেপাল। পাওয়ারপ্লেতে ৩২ রান এলেও কোনো উইকেট হারায়নি দলটি। উদ্বোধনী জুটিতেই ৩৭ রান তুলে নেন কুশাল ভুরতেল ও আসিফ শেখ। ১৩ রান করা কুশাল আউট হতেই ব্যাটিং ধস নামে নেপালের ইনিংসে। বিদায় নেন অনিল শাহ (২৭) ও দীপেন্দ্রি সিং আইরে। বিশেষ করে অনিল শাহ বিদায় নিতেই ধস শুরু হয় নেপালের ব্যাটিংয়ে। সহজ ম্যাচ হয়ে ওঠে কঠিন। আসিফ শেখকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। আসিফও দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান করে একই পথ ধরেন। ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে ওঠে নেপালের লক্ষ্যমাত্রা।
শেষ ২ ওভারে ১৬ রান দরকার ছিল নেপালের। ১৯ তম ওভারে প্রথম ৪ বল করে কোনো রান দেননি আনরিখ নরকিয়া। ফিরিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম শতকের মালিক কুশল মাল্লাকেও। তবে শেষ ২ বলে একটি ছক্কাসহ ৮ রান নেন সোমপাল কামি। তাতে মোমেন্টাম সঙ্গে নিয়েই শেষ ওভারে যায় নেপাল।
শেষ ওভারে যখন ৮ রান দরকার, তখন প্রথম ২ বলে কোনো রান দেননি বার্টম্যান। তৃতীয় বলে সামনে এগিয়ে বাউন্ডারি মারেন গুলশান ঝা।পরের বলেও ২ রান নেন গুলশান। কিন্তু শেষ ২ বলের একটিও ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি। ব্যাটে না লাগলেও শেষ বলে দৌড়ে রান নেয়ার চেষ্টা করেছেন গুলশান এবং সোমপাল। ব্যাটিং প্রান্তে সোমপাল পৌঁছে গেলেও অন্যপ্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি গুলশান। দুর্দান্ত থ্রোয়ে স্টাম্প ভাঙেন হেনরিখ ক্লাসেন। এতে ১ রানের ন্যুনতম ব্যবধানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে সেন্ট ভিনসেন্টের পিচে দীপেন্দ্র সিং আইরে এবং কুশাল ভুর্তেলের বোলিং তোপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। রেজা হেনড্রিকস আভাস দিয়েছিলেন বড় সংগ্রহ দাঁড় করানোর। কিন্তু দীপেন্দ্রর তিন আর ভুর্তেলের চার উইকেটের সুবাদে চাপে পড়ে যায় প্রোটিয়ারা। শেষদিকে ত্রিস্টান স্টাবস ১৮ বলে ২৭ রান করে স্কোরবোর্ডে নিয়ে আসেন ১১৫ রান। লো-স্কোরিং ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মান বাঁচাতে সেটিই হয়ে যায় যথেষ্ট।