স্বর্ণালংকারের দোকান লুট করতে গিয়েছিল একদল ডাকাত। সংখ্যায় তারা সাতজন। ঘটনাটি চোখে পড়ে পুলিশের এক কর্মকর্তার। সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যান তিনি। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় তুমুল লড়াই ও গোলাগুলি। শেষ পর্যন্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার হাতে পরাস্ত হয় ডাকাত দল। ভেস্তে যায় প্রায় চার কোটি রুপির স্বর্ণালংকার ডাকাতির চেষ্টা।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রানিগঞ্জ এলাকায়। সাহসী ওই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন উপপরিদর্শক মেঘনাদ মণ্ডল। পুলিশ জানিয়েছে, গত রোববার বিকেলে ব্যক্তিগত কাজে ঘটনাস্থল দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সাদা পোশাকে থাকলেও তাঁর সঙ্গে ছিল পিস্তল। এ সময় তিনি দেখতে পান মুখোশধারী সাত ডাকাত অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একটি স্বর্ণালংকারের দোকানে ঢুকছে।
দোকানের ভেতরে গিয়ে স্বর্ণালংকার লুট শুরু করে ডাকাতেরা। আর পাশের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির পেছনে অবস্থান নেন মেঘনাদ। তখন দোকানের বাইরে পাহারায় থাকা এক ডাকাত তাঁকে লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি চালাতে থাকে। তার সঙ্গে যোগ দেয় দলের অন্য সদস্যরাও। পাল্টা জবাব দেন মেঘনাদ। তাঁর গুলিতে এক ডাকাত আহত হয়ে লুটিয়ে পড়ে।
মেঘনাদের সাহসিকতার মুখে ডাকাতেরা পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আহত সদস্যকে মোটরসাইকেলে তুলে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায় তারা। সঙ্গে নিয়ে যায় ১ কোটি ৮০ লাখ রুপির স্বর্ণালংকার। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকে তাদের ডাকাতি করা প্রায় আড়াই কোটি রুপির অলংকার, দুটি ব্যাগ ও ৪২টি গুলি। মেঘনাদ প্রথমে তাদের তাড়া করেছিলেন, তবে মোটরসাইকেলের গতির সঙ্গে পেরে ওঠেননি।
তখনই বিষয়টি আশপাশের পুলিশ সদস্যদের জানান মেঘনাদ। প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডের পুলিশকেও অবহিত করা হয়। পরে ঝাড়খন্ড পুলিশ একটি গাড়িসহ সুরাজ সিং নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল সোমবার বিহার থেকে মেঘনাদের গুলিতে আহত সেই ডাকাতকেও আটক করেছে পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতদের লক্ষ্য করে মেঘনাদ মোট ২০টি গুলি চালিয়েছিলেন। আটক দুই ডাকাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্যদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। এদিকে এ ঘটনার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন মেঘনাদ। তবে সাংবাদিকেরা যখন তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে যাচ্ছেন, তখন হাসিমুখে তিনি বলছেন, ‘আমি আসলে আমার দায়িত্বটাই পালন করেছি।’