নেত্রকোনায় মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে নেত্রকোনা মডেল থানার স্টাফ মেস থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খান।
ওই পুলিশ কনস্টেবলের নাম রুবেল মিয়া (২৮)। তিনি নেত্রকোনা মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পাছারাবাজার ইউনিয়নের সহনাটি গ্রামে।
নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রুবেল মিয়া ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর পুলিশের যোগ দেন। প্রায় এক বছর আগে তিনি নেত্রকোনা মডেল থানায় আসেন। তখন থেকে তিনি ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। গত রোববার রাত ১১টার দিকে তিনি মডেল থানা ভবনের দোতলায় একটি কক্ষে (স্টাফ মেস) ঘুমাতে যান। কিন্তু ওই দিন খালিয়াজুরী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থাকায় ওই কক্ষে আর কোনো সদস্য ছিলেন না।
পুলিশ বলছে, ঘটনার দিন রাত একটার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে একটি পোস্টে রুবেল আত্মহত্যার ইঙ্গিত দেন। নিজের ছোট ভাইকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তাও লিখে পাঠান তিনি।
সন্দেহজনক মনে হওয়ায় জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চান রুবেলের ছোট ভাই। পরে তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ময়মনসিংহে পাঠান। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হলে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে জানার জন্য নেত্রকোনা থানার ওসি আবুল কালামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
নেত্রকোনা জেলার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবল রুবেল মিয়া ১৪০টি ঘুমের বড়ি খেয়ে মারা গেছেন। জানতে পেরেছি, স্ত্রী জেসমিন আক্তারের সঙ্গে তাঁর কলহ চলছিল। রুবেল মিয়া এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। তিনি পরিবার নিয়ে নেত্রকোনা কোর্ট স্টেশন এলাকার একটি বাসায় থাকতেন। তিন থেকে চার দিন আগে তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। রুবেলের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’