সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের অবৈধভাবে বিপুল অর্থ ও সম্পদ অর্জন এবং তা অর্জন করতে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের চিত্রে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের ক্ষমতার লাগামহীন অপব্যবহার বেনজীরদের মতো ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন তৈরি করছে; যা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার জবাবদিহি কাঠামোকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িতদের সহযোগী এবং সুরক্ষা প্রদানকারীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি জমি দখলে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
সোমবার টিআইবির পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিমত প্রকাশ করা হয়। আইনশঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের এমন দৃষ্টান্তকে ন্যাক্কারজনক আখ্যা দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাবেক পুলিশপ্রধান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে ভয় দেখিয়ে, জোর প্রয়োগ করে জমি কিনে নেওয়া এবং তা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সদস্যদের যোগসাজসের যেসব অভিযোগ জানা যাচ্ছে, তা সত্যি ভয়ঙ্কর। তাঁর এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের কোথাও বিচারপ্রাপ্তির সুযোগও বলপূর্বক প্রতিরুদ্ধ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় মূল অপরাধী ও যোগসাজসকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি ভয়ে বা জিম্মি হয়ে জমি বিক্রিতে বাধ্য হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের কোনো বিকল্প নেই।
যখন প্রতিনিয়ত নামে-বেনামে নতুন নতুন সম্পদের হদিস পাওয়া যাচ্ছে, তখন সাবেক পুলিশ প্রধানের পরিবারসহ দেশত্যাগ কীভাবে সম্ভব- তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, বেনজীরের মতো আলোচিত ব্যক্তির সবার অজান্তে দেশ ছেড়ে যাওয়া সত্যি অবাক হওয়ার মতো। তাঁর বিদেশে চলে যাওয়ার ঘটনা যোগসাজসের মাধ্যমে হয়েছে কিনা, ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন ও তা বিদেশে পাচারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজস ছিল কিনা, কিংবা তার বিরুদ্ধে তদন্ত বাস্তবে শুধুই লোক দেখানো কিনা এমন প্রশ্ন ওঠা মোটেও অমূলক নয়। এক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট যে, ক্ষমতা কাঠামোর একটি নির্দিষ্ট অংশ তাঁকে সুরক্ষা প্রদান আগেও করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। ফলে সাবেক পুলিশপ্রধানকেই দুর্নীতির দায়ে আইনের আওতায় আনলে হবে না, তাকে সুরক্ষা বা সহযোগিতা প্রদান করা সব ব্যক্তিকেই যথাযথ বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।