‘ধাক্কা দিলি কেন’ বলে মারধর করে ছিনিয়ে নেয় ৭০ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগ

0
85
গ্রেপ্তার ডাকাত দলের তিন সদস্য এবং তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা সাড়ে নয় লাখ টাকা আজ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগের কর্মীরা, ছবি: সংগৃহীত

পুরান ঢাকার ইসলামপুরের নব নারায়ণ লেন থেকে একটি সোনার দোকানের কর্মচারীকে মারধর করে ৭০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ‘ধাক্কা পার্টি’ নামের একটি ডাকাত দলের সদস্যরা। ঘটনার এক মাস পর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তে নেমে ডাকাত দলকে শনাক্ত করে। পরে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ২৫ মে চট্টগ্রাম ও খুলনায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের হোতা খোকন দাস ওরফে বাইল্যা খোকনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতির সাড়ে ৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্য ব্যক্তিরা হলেন খোকন দাসের সহযোগী রেজাউল করিম ও কামাল হোসেন।

আজ বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, গত ২৬ এপ্রিল বিকেলে মা বুলিয়ান অ্যান্ড সিলভার জুয়েলার্স নামের একটি সোনার দোকানের ব্যবস্থাপকের নির্দেশে তাঁর কর্মচারী মহিউদ্দিন কদমতলীর খেজুরের গলির একটি আড়ত থেকে ৭০ লাখ টাকা একটা নীল রঙের স্কুলব্যাগে ঢুকিয়ে তাঁতীবাজারের ওই সোনার দোকানটিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইসলামপুরের নব নারায়ণ লেনের প্রবেশমুখে পৌঁছামাত্র একজন দুষ্কৃতকারী তাঁকে ধাক্কা দিয়ে উল্টো বলেন, ‘ধাক্কা দিলি কেন’। টাকা বহনকারী মহিউদ্দিন ‘স্যরি’ বলে বলে ক্ষমা চেয়ে চলে যেতে চাইলে আশপাশে ওত পেতে থাকা তাঁদের আরও সাত-আটজন সহযোগী তাঁকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ তুলে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা মহিউদ্দিনের চোখে গুল লাগিয়ে দেন এবং ৭০ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগটি টেনেহিঁচড়ে ছিনতাই করে নিয়ে যান।

ডিবি কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, তাঁরা ‘ধাক্কা পার্টি’ নামে ডাকাত দলের সদস্য। ডাকাতির ঘটনায় সোনার দোকানের মালিক আকিদুল ইসলাম গত ২৭ এপ্রিল কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। আশপাশের শত শত সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা বিশ্লেষণ এবং ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিবি লালবাগ বিভাগ ছায়া তদন্ত করে। কোতোয়ালি থানা-পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের তদন্তে পরিকল্পনাকারীসহ সহযোগীদের শনাক্ত করা হয়। তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ২৫ মে দিন ও রাতে ডিবি লালবাগ বিভাগ এবং কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একাধিক দল চট্টগ্রাম ও খুলনায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী খোকন দাস ওরফে বাইল্যা খোকন এবং তাঁর সহযোগী রেজাউল করিম ও কামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ডাকাতির নগদ সাড়ে নয় লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এর আগে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ বাবু ও শাহ আলম নামের দুই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে।

মশিউর রহমান বলেন, মা বুলিয়ান অ্যান্ড সিলভার জুয়েলার্স ভারত থেকে দেশে বাকিতে আনার ফল আমদানি করে। পরে তা কদমতলীর বিভিন্ন আড়তে পাইকারি বিক্রি করে। ওই সব আড়ত থেকে টাকা তুলে সোনার দোকানের মালিক আকিদুল ইসলামের হুন্ডির মাধ্যমে ভারতের আড়তদারের কাছে পাঠানোর কথা ছিল। গ্রেপ্তার ডাকাতদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলার খোঁজ পাওয়া গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.