যা ঘটেছিল রাইসির হেলিকপ্টারে

0
75
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছবি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটিতে কী হয়েছিল আর কেনই বা হঠাৎ এমন দুর্ঘটনা ঘটল, সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে। প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে বলে জানা গেছে। এতে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই।
 
সোমবার (২০ মে) বিবিসি ও রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
 
তবে আলোচনায় এসেছে হেলিকপ্টারটির নির্মাণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রও। ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি ‌সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
 
রাইসি যে হেলিকপ্টারটিতে যাত্রা করেছিলেন সেটির মডেল সম্পর্কে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল বেল ২১২ মডেলের, যা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।
 
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই হেলিকপ্টারটি মাঝারি আকারের যেখানে ১৫টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে পাইলটের জন্য একটি আসন এবং যাত্রীদের জন্য বাকি ১৪টি।
 
জানা যায়, রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
 
দুর্ঘটনার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি উদ্বিগ্ন না হতে ইরানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।’
 
কে এই ইব্রাহিম রাইসি?
 
ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালে উত্তর-পূর্ব ইরানের শহর মাশহাদে। সে হিসেবে বর্তমানে তার বয়স ৬৩ বছর। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত রাইসি তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।
 
কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত রাইসি পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এ সভা। তাকে দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির স্বাভাবিক উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন করে ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইব্রাহিম রাইসি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.