পার্লামেন্টে সংস্কার নিয়ে বিরোধের জেরে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন তাইওয়ানের আইনপ্রণেতারা। গতকাল শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরই তাইওয়ান সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি বাড়াতে আইপ্রণেতাদের আরও ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবের ওপর বিতর্কের কথা ছিল।
গতকাল সকালে প্রথমে পার্লামেন্টের বাইরে চিৎকার–চেঁচামেচি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন আইনপ্রণেতারা। পরে তা পার্লামেন্টের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে। আইনপ্রণেতারা স্পিকারের আসনের চারপাশ ঘিরে রাখেন। অনেকে হাতাহাতিতে জড়ান, এমনকি একে–অপরকে টেনে মেঝেতেও ফেলে দেন। কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও বিকেলে আবার বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
এমন সময় তাইওয়ানের পার্লামেন্টে এ ঘটনা ঘটল, যখন আগামী সোমবার শপথ নিতে যাচ্ছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লাই–চিং–তে। গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয় পান তিনি। তবে তাঁর দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি) পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে।
তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল কুয়োমিনতাং (কেএমটি) পার্লামেন্টে ডিপিপির চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। তবে তাদেরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তাই নিজেদের দাবিদাওয়াগুলো তুলে ধরতে ছোট দল তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) সঙ্গে হাত মিলিয়েছে তারা।
বিরোধীদের দাবি, সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি করতে পার্লামেন্ট সদস্যদের ক্ষমতা যেন আরও বাড়ানো হয়। এ ছাড়া বিতর্কিত একটি প্রস্তাবও এনেছে তারা। সেটি হলো, পার্লামেন্টে কোনো কর্মকর্তা মিথ্যা বিবৃতি দিলে, তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করা। তবে এসব দাবি ও প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে ডিপিপি।
গতকাল পার্লামেন্টে তিন দলের আইনপ্রণেতারাই হাতাহাতিতে জড়ান। তাঁদের মধ্যে কেএমটির আইনপ্রণেতা জেসিকা চেনকে দেখা যায় হেলমেট মাথায়। তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগের ওপর পার্লামেন্ট যেন আরও ভালোভাবে তদারকি করতে পারে, সে জন্যই এ সংস্কারের প্রয়োজন। তবে ডিপিপি তা চায় না। কারণ, একচেটিয়াভাবে ক্ষমতায় থাকতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা।
তাইওয়ানের পার্লামেন্টে এর আগেও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শূকরের মাংস আমদানি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০২০ সালে পার্লামেন্টের মেঝেতে শূকরের নাড়িভুঁড়ি ছুড়ে মেরেছিলেন কেএমটির আইনপ্রণেতারা।