বাসায় পড়াশোনা করে ১০ বছর বয়সে কলেজে ভর্তি, পিএইচডি শেষ ১৭ বছরে

0
100
১৭ বছর বয়সে পিএইচডি ডিগ্রি শেষ করে হাস্যোজ্জ্বল ড. ডরোথি জিন টিলম্যান, ছবি: এবিসি নিউজ

ডরোথি জিন টিলম্যান যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুধু যে নিজে পড়াশোনা করেছেন তা–ই নয়, এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইনস্টিটিউটও। অল্প বয়সে এত বড় একাডেমিক সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন মায়ের উৎসাহ ও সহযোগিতাই তাঁকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইন্সটিটিউট
এই সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইন্সটিটিউট,ছবি: ডরোথির ইনস্টাগ্রাম থেকে

সবচেয়ে চমকপ্রদ যে তথ্যটি ডরোথি জিন দিয়েছেন তা হলো, মা তাঁকে ১০ বছর পর্যন্ত বাসায় রেখে পড়াশোনা (হোম স্কুলিং) করিয়েছেন, যা তাঁকে তাঁর নিজের গতিতে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে সাধারণ স্কুলের থেকেও দ্রুত বিভিন্ন শিক্ষা স্তর পার হতে পেরেছেন। এরপর মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি কলেজে ভর্তি হয়ে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেন। ১২ বছর বয়সে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং ১৪ বছর বয়সে এমএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ডরোথি তাঁর পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন এবং উচ্চ স্তরের পাঠ্যক্রম ও গবেষণার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। তাঁর নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমের পাশাপাশি তাঁর মা ও পরিবারের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ডরোথির মা জিমালিটা টিলম্যান বলেন, ‘যখন অনেক ছোট, তখনই তিনি খেয়াল করেন ডরোথি গণিতে অনেক ভালো। আমাদের চাইল্ড কেয়ার প্রোভাইডার মিস মেরি প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন যে ডরোথির যখন তিন-চার বছর বয়স, তখন থেকেই সে দুই অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা নিয়ে কাজ করতে পারে। আমরা তার লেখাপড়ার প্রতি ভালোবাসা দেখে সত্যিই আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাই।’

বাবা-মায়ের সঙ্গে ড. ডরোথি জিন টিলম্যান
বাবা-মায়ের সঙ্গে ড. ডরোথি জিন টিলম্যান, ছবি: এবিসি নিউজ

জানা যায়, ২০১৬ সালে ডরোথি ১০ বছর বয়সে কলেজ অব লেককাউন্টি থেকে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি নিয়ে ফেলে। ১২ বছর বয়সে আলবেনিস এক্সেলসিয়র কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্ট ও গণিত–সম্পর্কিত স্টেম (STEAM) বিষয়গুলোতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন ডরোথি। ফলে তিনি ১৪ বছর বয়সে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। সিদ্ধান্ত নেন অন্য বাচ্চাদের তাঁর মতোই একই ক্যারিয়ার বেছে নিতে সহায়তা করার। ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা করেন ডরোথি জিনিয়াস স্টেম লিডারশিপ ইনস্টিটিউট।

পড়াশোনা, গবেষণা ও নিজের ইনস্টিটিউটের কাজ সামলে ১৭ বছর বয়সে এখন তিনি ড. ডরোথি জিন টিলম্যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে তাঁর অনুভূতি জানাতে গিয়ে লেখেন, ‘আমি খুশি যে আচরণগত স্বাস্থ্যশিক্ষার ওপর ডক্টরেট সম্পন্ন করতে পেরেছি। অনেক মানুষকে আমার ধন্যবাদ জানানোর আছে আমাকে সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য। কিন্তু এ মুহূর্তে শুধু আমার ১ নম্বর চ্যাম্পিয়ন আমার মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে 
ড. ডরোথি জিন টিলম্যানের নানী
আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে ড. ডরোথি জিন টিলম্যানের নানী, ছবি: ডরোথির ইনস্টাগ্রাম থেকে

ডরোথির এ সাফল্যের পেছনে তাঁর ৭৭ বছর বয়সী নানির ভূমিকাও আছে। ডরোথি জিন টিলম্যানের নানি, যাঁর নাম ডরোথি জিন রাইট টিলম্যান একজন মহীয়সী নারী। তিনি খুব অল্প বয়সেই সিভিল রাইটস মুভমেন্টে যোগ দিয়েছিলেন এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। তিনি ১৯৮৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত শিকাগোর থার্ড ওয়ার্ডের অ্যালডারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং শিক্ষার সংস্কার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.