গতকাল সোমবার এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুই দেশ। এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইরানের সঙ্গে কোনো দেশ ব্যবসায়িক চুক্তিতে গেলে তারা ‘সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার’ মুখে পড়তে পারে।
পাকিস্তান সীমান্তের কাছে অবস্থিত চাবাহার বন্দর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরটি উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ২০১৬ সালে তেহরানের সঙ্গে চুক্তিতে যায় ভারত। এরপর গতকাল দীর্ঘমেয়াদি ওই চুক্তিতে গেল নয়াদিল্লি। ভারতের নৌপরিবহনমন্ত্রী চুক্তিটিকে ভারত-ইরানের সম্পর্কের ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেছেন।
তবে ভারত ও ইরানের চুক্তিটি ভালো চোখে দেখছে না ওয়াশিংটন। গত তিন বছরে তেহরান–সংশ্লিষ্ট ছয় শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা। আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে দিল্লি-তেহরানের চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আবার নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এখনো কার্যকর। এসব নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করা হবে। যেসব পক্ষ ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করার কথা ভাবছে, তাদের সম্ভাব্য মার্কিন ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই হুঁশিয়ারি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত।
২০১৮ সালের শেষের দিকে চাবাহার বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ভারত। এই বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের পথ খুলে যায়। একই সঙ্গে চাবাহার বন্দর ব্যবহারের কারণে পাকিস্তানের স্থলপথ ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ভারত। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চাবাহার বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে আফগানিস্তানে ২৫ লাখ টন গম ও ২ হাজার টন ডাল পাঠানো হয়েছে।
চুক্তির বিষয়ে ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ জানান, চুক্তি অনুযায়ী চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে মোট ৩৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবেন তাঁরা। আর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, এই চুক্তির ফলে চাবাহার বন্দরে বড় বিনিয়োগের পথ খুলে যাবে।