টেকনাফের উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি নুরুল আলমকে ফাঁকা গুলি করে মারধরের চেষ্টাসহ হুমকি দিয়েছেন উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। এমন অভিযোগ উঠেছে সাবেক এ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেশখালীয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এরই জের ধরে শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে টেকনাফ থানায় আবদুর রহমান বদি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলমসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে সাধারণ ডায়েরি করেছেন আসন্ন টেকনাফ উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আলম।
এ বিষয়ে নুরুল আলম তার দলীয় কার্যালয়ে সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলমের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্টের অপতৎপরতা রোধে সংবাদ সম্মেলন করেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে রাত ১১টার দিকে আমি ও আমার কর্মীরা হোয়াইক্যং ইউপির কম্বোনিয়া পাড়া পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়ায় মুরুব্বি এবং ইউপি সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হই। মহেশখালিয়া পাড়া মসজিদের সামনে বসে আমরা কথা বলছিলাম। এমন সময় সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো গাড়ি নিয়ে মসজিদের সামনে এসে দাঁড়ান উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। এরপর গাড়ি থেকে নেমে তিনি ও জাফর চেয়ারম্যান বকাবকি করে। একপর্যায়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে ভয়ভীতি দেখায়। সেসময় তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমাদের দিকে গুলি তাক করে রাখে।
নুরুল আলম বলেন, ঘটনার সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফরিদুল আলম জুয়েল তাদের বাধা দেন। এরপর আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। এই ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে আমি টেকনাফ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
নুরুল আলম আরও বলেন, এমপি বদি সংসদ সদস্য না হয়ে স্টিকার লাগানো গাড়ি নিয়ে একজনের পক্ষে নির্বাচন করতে পারেন না। প্রতিটি সভায় প্রতিপক্ষকে নির্বাচিত করার জন্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন, যা আইন ও নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন।
তবে টেকনাফ থানায় নুরুল আলমের দায়ের করা সাধারণ ডায়েরির কোথাও গুলির বিষয়টি উল্লেখ নেই বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে টেকনাফ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল গনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আলমকে বিবাদী করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুরুল আলম ও জাফর আলম একই এলাকায় যায়। তখন জাফর আলম ও সাবেক সংসদ সদস্য বদি উপজেলা চেয়ারম্যানকে মারধরের চেষ্টাসহ হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগে লেখা রয়েছে। অভিযোগের কোথাও গুলির কথা উল্লেখ করেননি বাদী। তবুও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে কি ঘটেছে জানতে চাইলে উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি বলেন, ‘আমাকে একটু পরে কল দিলে কথা বলতে পারব।’
যদিও পরে তিনি আর এ প্রতিবেদকের কল রিসিভ করেননি।
তবে অপর অভিযুক্ত টেকনাফ উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাফর আলম বলেন, ‘বদি ভাই আমার সঙ্গে ছিলেন তো। এ ধরনের কিছুই হয়নি। তার (নুরুল আলম) ভাই নুরুল বশর জাতীয় নির্বাচনে আবদুর রহমান বদির স্ত্রী শাহীন আকতারের কাছে হেরেছে। এরপর থেকেই বদি ভাইয়ের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে পরিবারটি।’