গ্যাসের অবৈধ সংযোগের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, যারাই অবৈধ সংযোগ নিয়ে থাকুক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ লাখ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অনেক বাধা বিপত্তি এড়িয়েই এগুলো করা হয়েছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কাজ করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী কাওরান বাজারের তিতাস কার্যালয় পরির্দশনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন। পরে তিনি তিতাসের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার, তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশীদ মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, তিতাস গ্যাসের গত দু্ই বছরে ৩৩৬টি শিল্প গ্রাহকের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ৪৭৫টি বাণিজ্যিক, ক্যাপটিভ পাওয়ার ৯৭টি, ১৩টি সিএনজি স্টেশন, ৯৮৯ কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন লাইন অপসারণ করা হয়েছে। মোট ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭০টি গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। গ্রাহকদের ৬০৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিতাসের সিস্টেমলস ২২ শতাংশ। সিস্টেম লস থেকে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে বছরে কয়েক শত কোটি টাকা অপচায় বন্ধ হয়েছে। নির্দেশনা রয়েছে, সেটা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে। বিতরণ কোম্পানিগুলোকে বলা হয়েছে, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প, বাণিজ্যিক সব গ্রাহকের বাড়ি-বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তদারকি করতে হবে। সিএনজি স্টেশনগুলো নতুন করে অডিট করতে হবে।
তিনি বলেন, তিতাসে ভূতুড়ে গ্রাহক আছে। অনেকে গ্যাস বিল দিচ্ছে। কিন্তু তিতাসের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে না। আশা করছি, কয়েক মাসের মধ্যে এগুলোর আরও উন্নত হবে। তিতাসের জন্য থার্ড পার্টি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফাইনান্সিয়াল কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের আর্থিক অবস্থা যাচাই করা হচ্ছে। বিলিং পদ্ধতি, গ্রাহকের সঙ্গে হিসাব, ভূতুড়ে বিল আছে কিনা, বেচাকেনার মধ্যে ফাক-ফোঁকর আছে কিনা? সেগুলো চেক করতে হবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাস ব্যবহারে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, এতে সহায়তা করবে একটি বিদেশি ব্যাংক। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পাবে। এছাড়া মূল লক্ষ্য হলো- শিল্পে গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার। শিল্প গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা। প্রিপেইড মিটার ইনস্টলেশনের জন্য এডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং জেবি জাপান ব্যাংক সহায়তা করবে। ৩০ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, তিতাস একটা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। সরকারের সহযোগিতার বাইরে যাতে নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারে। সেজন্য আইপিও ও বন্ড থেকে ফান্ড বৃদ্ধি করা যায় কী না, সেটাও ভাবা হচ্ছে।