গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভিতরে নারী কয়েদির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় আরেক নারী কয়েদিকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ওই কয়েদির প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন আশরাফুলসহ তার সহযোগিরা। ভুক্তভোগী ওই নারী কয়েদি একটি মাদক মামলায় কারাগারে আছেন।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) অভিযুক্ত কারারক্ষীর শাস্তি চেয়ে নির্যাতিত কয়েদির মা করিমন নেছা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীর মা উল্লেখ করেন, আমার মেয়ে প্রায় ৫ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। কিছুদিন আগে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কর্মরত আশরাফুল ইসলাম নামে এক প্রধান কারারক্ষী (কারাগারে একাধিক ‘প্রধান কারারক্ষী’ পদ আছে) এবং এক নারী কয়েদির (রাইটার) অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলেন আমার মেয়ে। এতে আশরাফুল ও ওই নারী কয়েদি তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং এ ঘটনা কাউকে বললে হত্যা করে ‘হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে’ বলে চালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। আমার মেয়ে বিষয়টি কাউকে না জানানোর কথা বললেও তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এমনকি তাকেও অনৈতিক কাজ করতে চাপ দেওয়া হয় এবং টেনে হিঁচড়ে শরীরের কাপড় খুলে ফেলে শ্লীলতাহানি করা হয়। এখনো কারাগারের ভেতরে প্রতিদিন তার ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে।
করিমন নেছা উল্লেখ করা হয়, আমি একাধিকবার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে গাইবান্ধা কারাগারে গেলেও মেয়ের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে আমার মেয়ে গাইবান্ধা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আমি সাক্ষাৎ পায়। এরপর আমার কাছে কারাগারে নির্যাতনের বিবরণ দেন মেয়ে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের অভিযুক্ত কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আরেক কারারক্ষীর সময়ের। কিন্তু আমার নাম কেন বলা হচ্ছে সেটি আমার জানা নেই।
গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী বলেন, সোমবার এডিসি মহোদয় তদন্তে এসেছিলেন। ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে। কারাগারের ভেতরে পক্ষ-বিপক্ষ তৈরি হয়েছে। যা ফোনে বলা সম্ভব নয়। তবে ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) মো. মশিউর রহমান ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি জানান, অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছি। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। এরপর জেলা প্রশাসন জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।