কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিনের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে টানা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। গতকাল রাত আটটা থেকে একটা পর্যন্ত থেমে থেমে ভারী বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ।
এর আগে কয়েক দিন ধরে টেকনাফের হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিপরীতে মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপের উত্তর অংশ থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। গতকাল রাতে শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিনের বিপরীতে অবস্থিত মংডু টাউনশিপের দক্ষিণ অংশ থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেল। সীমান্ত এলাকার লোকজন বলছেন, মিয়ানমারের ওই এলাকায় দুটি গ্রাম হাস্যুরাতা ও নাখ্যংদিয়া থেকে এই বিস্ফোরণের শব্দ আসছে। নতুন করে ওই এলাকায়ও সংঘাত ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির রাখাইন প্রদেশে সাম্প্রতিক সময়ে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত তীব্রতর হয়েছে।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটা থেকে একটা পর্যন্ত মংডু টাউনশিপের উত্তরে নাকফুরা, বলিবাজার এবং দক্ষিণে হাস্যুরাতা ও নাইক্ষ্যংদিয়ায় আরাকান আর্মি ও সে দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। সীমান্তের ওই এলাকায় গত রাতে অর্ধশতের বেশি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেন্ট মার্টিন, টেকনাফ সীমান্তের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী, ঝিমংখালী, হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, পুরানবাজার, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়াসহ অন্তত ১৩টি গ্রামে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, রাখাইন রাজ্যে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সংঘাত চললেও এত দিন সেন্ট মার্টিনের মানুষ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়নি। গতকাল রাত আটটা থেকে থেমে থেমে ২০-২৫টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ শুনতে পান দ্বীপের মানুষ।
টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে আসা মিয়ানমারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, টানা দেড় মাসের বেশি সময় ধরে রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাত চলছে। আরাকান আর্মি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন এলাকা দখল করেছে বলে জানা গেছে। সরকারি বাহিনী এসব এলাকায় নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
তবে সীমান্তের পরিস্থিতির কারণে নতুন করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।