ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রস্তাবিত ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
একই সঙ্গে গাজায় অপর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা নিয়ে হ্যারিস ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন।
গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে দেওয়া বক্তব্যে হ্যারিস বলেন, গাজায় চরম দুর্ভোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপত্যকায় অন্তত ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি অবিলম্বে দরকার, যা এখন আলোচনার টেবিলে আছে।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বাড়াতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি কড়া ভাষায় আহ্বান জানিয়েছেন হ্যারিস। তিনি বলেছেন, ‘ত্রাণসহায়তার প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে ইসরায়েল সরকারকে অবশ্যই আরও কিছু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত চলবে না।’
ইসরায়েলকে নিয়ে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কর্মকর্তার সবচেয়ে কড়া মন্তব্য এটি। ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন প্রচণ্ড চাপের মুখে, তখন এমন মন্তব্য করলেন তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট।
এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা গত শনিবার বলেছেন, প্রস্তাবিত চুক্তিটি মোটামুটি মেনে নিয়েছে ইসরায়েল।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস যদি সবচেয়ে দুর্বল-অরক্ষিত জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়, তবে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে।
হামাসকে প্রস্তাবিত চুক্তিটি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হ্যারিস। তিনি মনে করেন, চুক্তির আওতায় জিম্মিরা মুক্তি পাবেন, গাজায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হবে।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, হামাস দাবি করছে, তারা যুদ্ধবিরতি চায়। ভালো কথা। একটি চুক্তির প্রস্তাব আলোচনার টেবিলে আছে। হামাসের এই চুক্তির ব্যাপারে রাজি হওয়া উচিত।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি বলছে, এই হামলায় প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন নিহত হন। তাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। সেদিন হামাস প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, জিম্মির সংখ্যা এখন ১৩০। এর মধ্যে ৩১ জন মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়।
গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩০ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
আজ সোমবার ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্টজের সঙ্গে হ্যারিসের বৈঠক হওয়ার কথা আছে।