বিপিএলে নতুন চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

0
126
ফরচুন বরিশাল

বিপিএলের প্রথম আসরেই ফাইনালে উঠেছিল বরিশাল। দলটির নাম তখন ছিল বরিশাল বার্নার্স। তৃতীয় মৌসুমেও ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বরিশাল বুলস ফ্র্যাঞ্চাইজি। মাঝের কয়েক আসরে দল ছিল না বরিশালের। ফরচুন নাম দিয়ে দেশের একমাত্র এই টি-২০ লিগে বরিশাল ফিরলেও ভাগ্য ফেরেনি তাদের। ২০২২ আসরের বিপিএলেও রানার্স আপ হয়ে শেষ করে তারা। এবার তামিম ইকবালের নেতৃত্বে ফাইনালের মঞ্চে পা রাখে বরিশাল, প্রতিপক্ষ চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবার আর হৃদয় ভাঙেনি বরিশালের, তামিমের হাত ধরে শক্তিশালী কুমিল্লাকে গুঁড়িয়ে প্রথমবারের মত বিপিএলের শিরোপা জিতেছে বরিশাল। দলের মতো অধিনায়ক হিসেবেও প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তামিম ইকবালও।

টসে হেরে আগে ব্যাট করে বরিশালকে ১৫৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাবে ৬ বল বাকি থাকতেই কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দেয় বরিশালের ফ্রাঞ্চাইজি। চারবার ফাইনাল খেলে কখনো না হারা কুমিল্লাকে এবার রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে; আর বরিশাল পেয়েছে প্রথমবার ট্রফি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার স্বস্তি।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দেওয়া ১৫৫ রান তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত শুরু পায় ফরচুন বরিশাল। তামিম-মিরাজের জুটি টিকে থাকে অষ্টম ওভারে পর্যন্ত। দলীয় ৭৬ রানে তামিমের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ২৬ বলে ৩৯ রানের বিষ্ফোরক ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন বরিশালের অধিনায়ক। স্কোরকার্ডে ৬ রান যোগ করতেই ফেরেন মিরাজও। ২৬ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৯ রান করে মঈন আলীর শিকার হন তিনি।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও কাইল মায়ার্স। মুশফিককে এক প্রান্তে রেখে চার ছক্কার ফুলঝুড়ি ফোটাতে থাকেন মায়ার্স। দুজনে মিলে গড়েন ৫৯ রানের জুটি। দলীয় ১৪১ রানে মায়ার্সের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কার সৌজন্যে ৩০ বলে ৪৬ রান করেন মায়ার্স। স্কোরকার্ডে ৩ রান যোগ হতেই সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। ১৮ বলে ১৩ রান করেন তিনি। তবে জয় পেতে খুব একটা সমস্যা হয়নি বরিশালের। বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন মাহমুদউল্লাহ ও ডেভিড মিলার। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ৭ রান করে। আর ৮ রান করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন মিলার।

ফরচুন বরিশাল

এর আগে টসে জিতে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। টসে হেরে কুমিল্লার হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন সুনীল নারিন ও লিটন দাস। প্রথম ওভারেই মাত্র ৫ রানে আউট হন নারিন। চলমান বিপিএলে ফর্মের তুঙ্গে থাকা তাওহিদ হৃদয়ও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ষষ্ঠ ওভারে ফেরেন অধিনায়ক লিটন দাসও। ফেরার পূর্বে ১২ বলে ১৬ রান করেন তিনি।

৩ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা কুমিল্লাকে টানছিলেন জনসন চার্লস ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। তবে দুজনের জুটিতে ২৩ রানের বেশি হয়নি। দলীয় ৬৫ রানে ম্যাককয়ের বলে তামিমের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন চার্লস। ফেরার আগে ১৭ বলে ১৫ রান করেন এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার। দলীয় ৭৯ রানে রান আউট হয়ে ফিরলেন মঈন আলি। এতে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে যায় কুমিল্লা।

ষষ্ঠ উইকেটে জাকের আলী অনিককে নিয়ে দলের হাল ধরেন অঙ্কন। দুজনে মিলে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। ২টি করে চার-ছক্কা হাঁকানো অঙ্কন ৩৫ বলে ৩৮ রান করে বিদায় নিলে ক্রিজে নামেন আন্দ্রে রাসেল। শেষ দিকে ঝড় তোলেন এই ক্যারিবিয়ান। ১৯তম ওভারে জেমস ফুলারের ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন। খেলেন ১৪ বলে অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংস। এছাড়া জাকের আলী ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান দাঁড়ায় কুমিল্লার সংগ্রহ।

বরিশালের ফুলার ৪ ওভারে ৪৩ রানে ২ উইকেট নেন। এছাড়া মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, কাইল মায়ার্স ও ওবেদ ম্যাককয় নিয়েছেন একটি করে উইকেট।

ফরচুন বরিশাল: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, ডেভিড মিলার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), কাইল মায়ার্স, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাইজুল ইসলাম, ওবেদ ম্যাককয় ও জেমস ফুলার।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: লিটন দাস (অধিনায়ক), মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, তাওহিদ হৃদয়, জনসন চালর্স, জাকের আলী (উইকেটকিপার), মঈন আলি, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, রোহানতদৌল্লাহ বর্ষণ, মুস্তাফিজুর রহমান ও তানভীর ইসলাম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.